‘ইলি পিকা’ নামের খুব সুন্দর একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী প্রায় ২০ বছর ধরে মানুষের সঙ্গে লুকোচুরি খেলে যাচ্ছে। খুবই ছোট আর টেডি বিয়ারের মত দেখতে এই প্রাণীটি চীনের পাহাড়ে বাস করে। চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তিয়ানশান পর্বতে ঘুরে বেড়ায় এরা।
১৯৮৩ সালে প্রথম এই প্রাণীটি দেখা যায়। এরপর থেকে খুব অল্প সময়ই এদের দেখা গেছে। এদের খাদ্যাভ্যাস আর আচরণ সম্পর্কেও তেমন কিছু জানা সম্ভব হয়নি।
মাঝখানে অনেকদিন দেখা যায়নি এই প্রাণীটি। গত বছর গ্রীষ্মে আবারও দেখা মেলে ইলি পিকার।
ওয়েইডং লি, যিনি এই প্রাণীর প্রকৃত আবিষ্কারক এবং Xinjiang Institute for Ecology and Geography-এর একজন বিজ্ঞানী। তিনি একদল স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে তিয়ানশান পর্বতে পিকা খুঁজতে যান। সেদিন বিকালেই তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত জিনিসটি পেয়ে যান। লি সাথে সাথে বেশ কয়েকটি ছবিও তুলে ফেলেন। সব মিলিয়ে মাত্র ২৯টি পিকার দেখা পাওয়া গিয়েছে।
আর আগে ১৯৮৩ সালে চীনা সরকার লি’কে তিয়ানশান পর্বতে পাঠান সেখানকার প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে গবেষণা করতে। সেখানে হঠাৎ তিনি পাথরের ফাঁকে ছোট, ধূসর মাথাবিশিষ্ট একটি প্রাণী লক্ষ্য করেন। একটু সামনে এগুতেই পুরো প্রাণীটি নজরে আসে তার।
প্রাণীটি লম্বায় মাত্র ৮ ইঞ্চি, বড় বড় কান আর ধূসর লোমে বাদামী রঙের ছোপ ছোপ দাগ। এইরকম প্রাণী লি প্রথম দেখেন, এমনকি সেখানকার মানুষের কাছেও এরা নতুন ছিল। লি তাই একটা প্রাণী ধরে চীনের একাডেমী অফ সায়েন্সে পাঠান। সেখানে তারা নিশ্চিত করেন যে এটি নতুন একটি প্রজাতি।
অবশ্য পিকার আরও কয়েকটি জাত উত্তর আমেরিকায় পাওয়া গিয়েছে, তবে ইলি পিকা ৯,২০০ থেকে ১৩,৪৫০ ফিট উচ্চতায় বাস করে। এরা ঘাস, লতাপাতা এবং বিভিন্ন পাহাড়ি গাছ খেয়ে বেঁচে থাকে।
উঁচু স্থানে বসবাসকারী প্রাণীরা পরিবেশের পরিবর্তন সহ্য করতে পারে না। ইলি পিকাও এর ব্যতিক্রম নয়। ১৯৯০ সালের দিকে ২ হাজার ইলি পিকা ছিল যার বর্তমান সংখ্যা খুবই কম। তবে International Union for Conservation of Nature ইতোমধ্যেই এদের সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।