উড়তে না পারা পাখিদের গল্প

একটা পাখি শালিক পাখি
তাথৈ তাথৈ নাচে,
সেই পাখিটা উড়ে আসে
ধান ফসলের কাছে।

কবি কাজী রফিক এইভাবে তার ছড়ায় শালিক পাখির উড়ার সৌন্দর্যকে বিবৃত করেছেন। সত্যিই তো তাই,পাখির আসল সৌন্দর্যই আকাশে তার দুই পাখা মেলে স্বাধীন ভাবে বাধাহীন পথে উড়ে চলা এবং এই অবাধ স্বাধীনতা দেখে মানুষের ঈর্ষান্বিত হওয়া, এবং নিজের অজান্তে বলে ওঠা ইশ যদি এইভাবে আমরা উড়তে পারতাম!

মানুষের এই উড়ার আশা রাইট ভ্রাতৃদ্বয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন হলেও এমন কিছু পাখি আছে যারা তাদের স্বজাতীয়দের মতো আকাশে উড়তে অক্ষম !

উড়তে অক্ষম এই পাখিগুলাকে বলা হয় Ratite । ডারউইন এদেরকে পর্যবেক্ষণ করে বলেছিলেন যে Ratite গোত্রের পাখির একে অপরের নিকট আত্মীয়।

তবে এই উড়তে না পারার কারণে এরা খুব একটা কষ্টে নেই। না উড়তে পারলেও এদের যা আছে তা নিয়ে এরা সহজে জীবন যাপন করে থাকে। এদের দুইটি পাখা থাকার শর্তেও এরা উড়তে পারে না কারণ এদের শরীরের বাড়তি ওজন এবং এদের পাখার অস্থি ও Keel (পাখা নড়াচড়ার জন্য বিশেষ পেশী) এর স্বল্প দৈর্ঘ্য।

যেমন প্রথমে উট পাখির কথাই ধরি, এর শরীরের ওজন হয় ৬৮-১৪৩ কেজি পর্যন্ত ও এটি ৯ ফুট দীর্ঘ। এর কারণে উট পাখি আকারে যেমন বড় তেমনি দ্রুত গতিসম্পন্ন তেমনি শক্তিশালী। কিন্তু এর ২ মিটার পাখা এর শরীর এর ভারকে ধরে রাখার মতো যথেষ্ট মজবুত নয়, তাই এটি দ্রুত চলতে পারলেও উড়তে পারে না।

উট পাখির মতো এমু পাখিও উড়তে পারে না। এর শরীরের ওজন ১৮-৪৫ কেজির মতো হয়ে থাকে এবং দৈর্ঘ্য ৫-৬ ফুট।এরাও উড়তে পারে না কিন্তু দৌড়ানোর সময় এরা পাখা ঝাঁপটায়। এদের নখ খুব তীক্ষ্ণ হয় এবং এই নখকে এরা প্রতিরক্ষার অন্যতম অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে।

আমরা হয়তো অনেক সময় শুনে থাকি যে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট টিমকে কিউই বলে ডাকা হয়। হ্যাঁ, কিউই পাখিও উট ও এমু পাখির মতো উড়তে পারে না। চুলের মতো দেখতে পালকের আড়ালে লুকিয়ে থাকে এদের নামমাত্র Vestigial পাখা। এদের পাখা এত ছোট যে এদের উড়ার কথা চিন্তা করাও অনুচিত।কিউই পাখি সাড়ে ৩ কেজির এবং ১৮ ইঞ্চির হয়ে থাকে। শারীরিক মাপ অনুযায়ী জীবিত প্রাণীদের তুলনায় এদের ডিমের আকৃতি সবচেয়ে বড় হয়। এর ডিম প্রায় ওজনে ১ পাউন্ড হয়ে থাকে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন