ক্রিকেট খেলায় মাঝেমধ্যেই বোলারসহ উইকেট কিপার এবং আশপাশের ফিল্ডাররা চিৎকার করে উঠেন “হাউ’স দ্যাট?” (How’s that) বলে। এটি আসলে আম্পায়ারের কাছে আবেদন করার এক ধরণের নিয়ম। ক্রিকেট খেলায় কোন ব্যাটসম্যানকে এলবিডব্লিউ (LBW) আউট করতে চাইলে এইভাবে আবেদন করে থাকেন ফিল্ডাররা।
LBW এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Leg Before Wicket . শুনেই বুঝা যাচ্ছে যে উইকেটের সামনে পা থাকলে বল যদি পায়ে লাগে তাহলে ফিল্ডাররা আবেদন করলে আম্পায়ার সেই ব্যাটসম্যানকে আউট দিতে পারে। তবে পা ছাড়া ব্যাটসম্যানের শরীরের অন্য কোথাও বল লাগলেও সে এলবিডব্লিউ আউট হতে পারে।
এলবিডব্লিউ আউটের নিয়ম
কোন ব্যাটসম্যানকে এলবিডব্লিউ আউট করতে হবে সবার প্রথমে বোলারসহ অন্যান্য ফিল্ডারদেরকে আম্পায়ারের কাছে জোরালভাবে আবেদন করতে হয়। এখন আউট হয়েছে কিনা সেটার ফলাফল জানানোর জন্য আম্পায়ারকে তাৎক্ষনিকভাবে কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করতে হয়।
সবার প্রথমে আম্পায়ার দেখেন যে ‘লিগ্যাল ডেলিভারি’ (Legal delivery) ছিল কিনা। অর্থাৎ কোনোভাবে বলটি নো বল হয়েছে কিনা। যদি নো বল না হয় তাহলে আম্পায়ার লক্ষ করেন বলটি দুই প্রান্তের উইকেটত্রয়ের মাঝলাইন বরাবর পড়েছে কিনা? তবে মাঝলাইনে না পড়ে যদি ব্যাটসম্যানের অফ সাইডে পড়ে তাহলেও এলবিডব্লিউ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
একই সাথে আম্পায়ারকে বলের উচ্চতার দিকেও খেয়াল রাখতে হয়। অর্থাৎ বল যদি উইকেটের উপর দিয়ে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে সেটি আউট হবে না।
এরপর আম্পায়ার যে বিবেচনা করেন, বলটি ব্যাটসম্যানের শরীরের কোন স্থান স্পর্শ করেছে কিনা।
বল ব্যাটসম্যানের পা ছাড়াও হাত, কাঁধ এমনকি মাথায় লাগলেও সেটি এলবিডব্লিউ আউট হবার সম্ভাবনা থাকে। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে শরীরে লাগার আগে বল ব্যাটসম্যানের ব্যাট বা কব্জির নিচে কোন জায়গা স্পর্শ করে গিয়েছে কিনা। সেক্ষেত্রে আউট হবার কোন সম্ভাবনা নেই।
আইসিসির প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী আরেকটি বিষয় আম্পায়ারকে নজর রাখতে হয়, ব্যাটসম্যান যে কোন ধরণের শট খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়েছে কিনা। তাহলে আউট হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে ব্যাটসম্যান যদি প্রতিরক্ষামূলক (ডিফেন্সিভ) কোন শট খেলে বা আদৌ কোন শট না খেলে সেক্ষেত্রে এলবিডব্লিউ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
আম্পায়ারকে খুব গুরুত্বের সাথে খেয়াল রাখতে হয় যে বলটি যদি ব্যাটসম্যানের গায়ে না লাগতো তাহলে সেটি উইকেটে লাগতো কি না? যদি তা হয় তাহলে আম্পায়ার ব্যাটসম্যানকে আউট ঘোষণা করতে পারেন। এসব মুখ্য বিষয়গুলো ছাড়াও আরও কয়েকটি ছোটখাটো বিষয়ের উপর এলবিডব্লিউ আউট নির্ভর করে।
অনেক সময় ব্যাটসম্যান রিভার্স সুইপ বা সুইচ হিটের মত কিছু শট খেলে থাকেন। এসব ক্ষেত্রে ব্যাটসম্যানের অফ সাইড কোনটি তা নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে বোলার বোলিং শুরু করা অবস্থায় ব্যাটসম্যান যে অবস্থানে ছিল সে অনুযায়ীই তার অফ সাইড ধরা হয়ে থাকে।
আবার বল যদি ফুল টস (Full toss) হয়ে থাকে অর্থাৎ বল পিচে না পড়েই যদি সরাসরি ব্যাটসম্যানের গায়ে আঘাত করে সেক্ষেত্রে আম্পায়ার বিবেচনা করেন যে বলটি বাতাসে ঘুরে গিয়ে কোনোভাবে উইকেটে আঘাত করতো কি না।
বর্তমানে এলবিডব্লিউ আউট নির্ধারণে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এখানে যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল করা হয় সেগুলো হচ্ছে লিগ্যাল ডেলিভারি, পিচিং (Pitching), ইমপ্যাক্ট (Impact) এবং হিটিং উইকেট (Hitting wicket)। এ সবগুলো বিষয় বিবেচনা করেই আম্পায়ার একজন ব্যাটসম্যানকে এলবিডব্লিউ আউট ঘোষণা করেন।