প্রকৃতপক্ষে বাঘ জাতীয় কোন একটি বিশেষ ধরণের প্রাণীকে ব্ল্যাক প্যানথার বা কালো প্যানথার বলা হয় না। আসলে যে কোনো বিড়াল গোত্রীয় প্রাণীই যদি কালো রঙের হয় তাহলে সেটাকে ব্ল্যাক প্যানথার বলেই ডাকা হয়।
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার প্রাণী বিশেষজ্ঞ ডেভিস বলেন, এদের গায়ের রং এরকম কালো হয় মূলত 'আগোটি' জিনের প্রভাবে। এই জিন প্রাণীর গায়ের পশমে ব্ল্যাক পিগমেন্ট ছড়িয়ে দেয়ার জন্য দায়ী।
এশিয়া এবং আফ্রিকায় এরা লেপার্ড নামে এবং দক্ষিণ আমেরিকার জাগুয়ার নামেই বেশি পরিচিত। তবে ঘরে আমরা যেসব বিড়াল পালন করি সেগুলোর কালো লোমের জন্য আগোটি জিন দায়ী নয়। ওদের এই রকম রঙের কারণ হচ্ছে মেলানিনের সারপ্লাস নামক পিগমেন্ট। এদের এমন অবস্থাকে বলা হয় ‘মেলানিস্টিক’।
কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, ব্ল্যাক প্যানথারের গায়ের রং কালো মানে এই নয় যে তাদের গায়ে কোন দাগ নেই। আসলে তাদের গায়েও দাগ আছে কিন্তু সেগুলো খুঁজে পাওয়া কঠিন।
Wildlife Conservation Society's Bronx Zoo -এর প্রধান কিউরেটর প্যাট্রিক থমাস বলেন, ‘যদি সূর্যের আলো এদের গায়ে একটি নির্দিষ্ট ভঙ্গিতে পড়ে তাহলে তাদের গায়ের দাগ স্পষ্টভাবে দেখা যায়। আর রোদ না থাকলে একটু দূরে দাঁড়িয়ে ভালোভাবে খেয়াল করলেও বুঝা যাবে যে এরা আসলে সম্পূর্ণ কালো নয়’।
তিনি আরো বলেন, ব্ল্যাক লেপার্ড সব জায়গায় দেখা যায় না। তবে এশিয়া এবং আফ্রিকায় এই প্রাণীর মোটামুটি দেখা মেলে।
নিশাচর শিকারিদের জন্য কালো গায়ের রং সুবিধাজনক কীনা? এমন প্রশ্নের জবাবে থমাস বলেন, ‘গায়ে দাগ আছে এমন যে কোনো প্রাণীর চাইতে একরঙা প্রাণীদের জঙ্গলের মাঝে চিহ্নিত করা সহজ। লেপার্ড, জাগুয়ার বা চিতা যখন দাগকাটা হয় তখন তাদের খুঁজে পাওয়া বেশি কষ্টকর’।
থমাস আরো বলেন, ব্ল্যাক প্যানথার সর্ম্পকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হচ্ছে কালো রঙের এ প্রাণীটি কিন্তু পুরোপুরি নিশাচর নয়। বরং তাদের সুযোগসন্ধানী বলা যেতে পারে।
কেননা তারা যখনই সুযোগ পায় তখনই শিকার করে, সেটা দিন হোক বা রাত। তবে যদি উজ্জ্বল আলো থাকে তাহলে একরঙা প্রাণীর চেয়ে দাগওয়ালা প্রাণী বেশি গা ঢাকা দিতে পারে’।
বিড়াল গোত্রীয় অন্যান্য প্রাণীদের দেহেও মেলানিন থাকতে পারে। তবে বাঘ বা সিংহের দেহে মেলানিন থাকার কথা এখনো শোনা যায়নি।