খেলা চলাকালীন পিচের পরিচর্যা

শুরু হয়ে গেছে ২০১৫ বিশ্বকাপ ক্রিকেট, আর এই জমকালো খেলার আসর নিয়ে ক্রিকেট ভক্তদের মাঝে উন্মাদনার শেষ নেই। যার যার প্রিয় দল নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছেই। এর পাশাপাশি আমরা দিয়ে যাচ্ছি ক্রিকেট সম্পর্কীয় কিছু মজার সাধারণ তথ্য।

ক্রিকেটে পিচ বলতে দুই উইকেটের মধ্যবর্তী অংশকে বোঝায়, এর দৈর্ঘ্য ২২ গজ বা ২০.১২ মিটার, এবং প্রস্থ ৩.০৫ মিটার।

খেলা শুরুর আগে, কিংবা ইনিংস ব্রেকের সময় মাঝে মাঝে দেখা যায় বড় রোলিং মেশিনের সাহায্যে পিচকে রোল করা হয়। অর্থাৎ পিচের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত রোলারটি চালানো হয়। কয়েক দফা চালানোর পর পিচের মাটি খেলার জন্যে উপযোগী হয়।

পিচের বিভিন্নতার কারণে খেলায়ও পরিবর্তন আসে।

যেমনঃ

  • পিচ যদি সামান্য স্যাঁতস্যাঁতে/হালকা ভেজা থাকে এবং পিচে কিছু ছোট ছোট ঘাস থাকে, তবে তা বলের মুভমেন্টে (Movement ) অনেক সাহায্য করে।   
  • পিচ যদি শুকিয়ে সামান্য শক্ত করে নেয়া হয় তাহলে তা ব্যাটিং এর জন্যে আদর্শ পিচ। কেননা এ পিচে বলের সুইং যেমন কম হয় তেমনি বল সামান্য বাউন্সি ও হয়। এ কারণে স্বাভাবিক উচ্চতার কোনো ব্যাটসম্যানের জন্যে বলগুলো খেলা খুব মানানসই হয়।
  • পিচের মাটি যদি সামান্য ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং জায়গায় জায়গায় যদি ভালো মানের ফাটল থাকে, তাহলে তা স্পিন বোলিং এর জন্যে সবচেয়ে বেশি পারফেক্ট হয়। কারন এ পিচে সীম বলের বাউন্স কম থাকে এবং পিচের কারণে স্পিন বলের সুইংও বেশি হয়। স্বাভাবিকভাবে টেস্ট খেলার শেষ দুই দিনে এরকম পিচ দেখা যায়।

সাধারনত খেলা শুরুর আগে, টসের আগেই একবার পিচ রোল করে নেয়া হয় এবং ইনিংস ব্রেকের সময় আরেকদফা রোল করে নেয়া হয়।

তবে খেলার মধ্য বিরতিতে ব্যাটিং দলের অধিনায়ক চাইলে পিচ রোলিং এর জন্যে আবেদন করতে পারেন। সর্বোচ্চ ৭ মিনিট সময় দেয়া হয় খেলার মধ্যবর্তী সময়ে পিচ রোলিং এর জন্যে।

আইসিসির ধারাবিধি ১১.৪ অনুযায়ী খেলা শুরুর আড়াই ঘণ্টা আগে পিচের কাভার তুলে পিচের পরিচর্যা শুরু করতে পারবে মাঠের কিউরেটররা। তবে বৃষ্টি থাকলে এই নিয়ম প্রয়োগ করা যাবে না। 

এছাড়া, পিচ রোলিং করা শেষ হলে ঝাড়ু দেয়া হয় যেন পিচে কোন ঘাস বা ময়লা না থাকে। 

খেলার আগে এবং মধ্য বিরতিতে বোলারদের রান -আপের জায়গায় কাঠের গুঁড়ো দেয়া হয়ে থাকে। কাঠের গুঁড়ো ভালো পানি শোষক এবং কাঠের গুঁড়ো বিছানোর ফলে পানি থাকলেও মাটি নরম হয় না। মাটি নরম থাকলে বোলারদের রান- আপে অনেক সমস্যা হয়। 

আইসিসির ধারাবিধি ৭.৩ অনুযায়ী খেলা শুরুর আগে শুধুমাত্র দলের কোচ ও অধিনায়ক যে পিচে খেলা হবে সেখানে হাঁটতে পারবে বা পিচ পরিদর্শন করতে পারবে। কিন্তু স্পাইকযুক্ত জুতা পড়ে তারা হাঁটতে পারবে না কেননা স্পাইকযুক্ত জুতা পিচে গর্ত তৈরি করতে পারে। 

এছাড়া, খেলার মধ্য বিরতিতে কিউরেটররা পিচে যে জায়গায় দাগ উঠে গেছে সেখানে আবার চুন দিয়ে দাগ দিয়ে থাকে।

মাঝে মাঝে দেখা যায় ফাস্ট বোলাররা পপিং ক্রিজে তাদের জুতা দিয়ে দাগ দেয়ার বা গর্ত করার চেষ্টা করে। তারা মূলত এটি করে যেন অপর প্রান্ত থেকে স্পিন বোলাররা ঐ দাগে বা গর্তে বল ফেলিয়ে বলের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে। তাই, ফাস্ট বোলাররা যখন জুতা দিয়ে দাগ দেয়ার চেষ্টা করে তখন আম্পায়াররা তাদের Warning দিয়ে থাকে যেন পরবর্তীতে একই কাজ না করে। পরবর্তীতে ফাস্ট বোলাররা যদি তাদের জুতা দিয়ে দাগ দেয়ার বা গর্ত করার চেষ্টা করে তবে তাদের আর বল করতে দেয়া হয় না।   

 

    

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন