আজকালকার প্রুযুক্তিময় দুনিয়ায় ফেসবুক,ভাইবার বা মোবাইলের মেসেজের ভিড়ে হাতে লেখা চিঠির প্রচলন চলে কিনা তা বলা মুশকিল ! ধরি কেউ একজন চিঠি লিখলো, প্রাপকের ঠিকানায় লিখলোঃ২৩/৩, মিরপুর, বাংলাদেশ। সহজেই হয়তো পৌঁছে যেতো চিঠিটি, কিন্তু সমস্যা বাধলো তখনই, যখন দেখা গেলো ঢাকাতেও মিরপুর আছে, কুষ্টিয়াতেও মিরপুর আছে। চিঠি প্রেরণকারী যদি পরিষ্কার করে লিখতেন তিনি কোন জেলার মিরপুরে চিঠি পাঠাতে চেয়েছেন, তাহলে কি এই সমস্যা হতো ?
পরিষ্কার করে লিখার উপায় কি তাহলে? উপায় হচ্ছে প্রাপকের ঠিকানার কোড নাম্বারটি খামের উপর লিখে দেয়া। আর এই বিশেষ ধরনের কোড নাম্বারটিকে পোস্টাল কোড বলা হয়। বাংলাদেশের একটি জেলার থানা/উপজেলা শহরের পোস্টাল কোড অন্য জেলার থানা/উপজেলা শহরের পোস্টাল কোড থেকে আলাদা।
মূলত ঠিকানার পূর্ণতা দিতেই পোস্টাল কোডের ব্যবহার হয়। সরকারি বেসরকারি প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই কোডের ব্যবহার রয়েছে। চাকুরির আবেদনপত্র কিংবা পাসপোর্ট তৈরী, সব ক্ষেত্রেই এর ব্যবহার রয়েছে।
চিঠি বিলিকারী ডাকঘরকে একটি পোস্ট কোড দেওয়া হয় চিঠি বাছাই যেন সুচারুভাবে সম্পন্ন হওয়ার জন্য। ডাক ব্যবস্থা ও ভৌগলিক ভাবে জনসংখ্যা বিন্যাস করে পোস্ট কোড প্রদান করা হয়। পোস্ট কোড প্রদানের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে চিঠি দ্রুত বিলির ব্যবস্থা করা।
এক এক দেশের পোস্টাল কোড এক এক রকম হয়। আবার কোনো কোনো দেশের পোস্টাল কোডে নাম্বারের পাশাপাশি বিভিন্ন বর্ণ দেয়া থাকে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই বাংলাদেশের পোস্টাল কোড প্রথা চালু হয়েছে।
বাংলাদেশের পোস্টাল কোড নাম্বারগুলো সাধারণত ৪ (চার) অক্ষর বিশিষ্ট হয়। বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের ওয়েবসাইট থেকে যে কেউ তার নিজস্ব শহরের পোস্টাল কোড খুঁজে নিতে পারবে। ওয়েবসাইট ছাড়াও, গুগল প্লে স্টোরে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরের পোস্টাল কোড সম্পর্কিত বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ রয়েছে।
ঢাকার মিরপুরের কোড ১২১৬, আবার কুস্টিয়ার মিরপুরের পোস্টাল কোড ৭০৩০। এরকম তারতম্যের কারণ কি?
পোস্টাল কোডের প্রথম দুই ডিজিট জেলা শহরের মূল পোস্ট অফিসকে নির্দেশ করে এবং শেষের দুই ডিজিট সেই জেলা শহরের থানা/উপজেলাকে নির্দেশ করে।