চিনি খাওয়ার ক্ষতিকর দিকগুলো

চিনি বা চিনিজাতীয় খাবার আমাদের সবারই কমবেশি প্রিয়। প্রতিদিনই তাই আমাদের চিনি বা চিনি থেকে তৈরি খাবার খাওয়া পড়ে। যদিও শরীরের জন্য চিনির দরকার রয়েছে কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত চিনি গ্রহণ আমাদের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। পৃথিবীজুড়ে মানুষের মাঝে চিনি খাওয়ার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে এবং এর ফলে মানুষ নানাবিধ স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। চিনি খাওয়ার এরকম কিছু ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আপনাদের সতর্ক করে দেব আজ।

চিনি মানুষের স্থুলতা বাড়ায়
শর্করা জাতীয় খাবারের চাইতে কয়েকগুন বেশি পরিমাণে মেদ তৈরি করে চিনি। ফলে চিনি খাওয়া মানে হচ্ছে শরীরের চর্বিকে পুষ্টি যোগান। একইসাথে চিনির ফ্রুক্টোজ যকৃতে জমা হয়ে যকৃতের অসুখ তৈরি করতে পারে।

মনের উপর প্রভাব ফেলে চিনি
অল্প পরিমাণ চিনি আপনার দেহে সেরেটোনিন প্রবাহ বাড়িয়ে দেয় যা মানুষের মনকে সতেজ করে তোলে। কিন্তু অধিক পরিমাণে চিনি গ্রহণ রক্তে চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দেয় যা মানুষের মনে হতাশা ও দুশ্চিন্তার সৃষ্টি করে।

দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী চিনি
অতিরিক্ত চিনি আমাদের ত্বকের কোষ পুনর্গঠনকে ব্যাহত করে যার ফলে ত্বকে দ্রুত বলিরেখা পড়ে যায় এবং বয়সের তুলনায় মানুষকে বেশি বুড়ো মনে হয়।

পেটে সমস্যার সৃষ্টি করে চিনি
আমাদের খাদ্যনালীতে অবস্থিত মাইক্রোফ্লোরা হজমে সাহায্য করে ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করে। কিন্তু চিনি এই মাইক্রোফ্লোরাকে ঠিকমতো কাজ করতে দেয় না। ফলে হজমে সমস্যা হয়, সেইসাথে কোষ্টকাঠিন্য, ডায়রিয়া, গ্যাস্ট্রিক ইত্যাদি পেটের সমস্যা দেখা দেয়।

চিনি আপনাকে আক্রমণাত্মক করে তুলবে
অদ্ভুত হলেও সত্যি যে মাত্রাতিরিক্ত চিনি মানুষের মাঝে আক্রমণাত্মক আচরণের জন্ম দেয়। সেই সাথে চিনি মানুষের মনোযোগ নষ্ট করে এবং হাইপারএক্টিভিটি সৃষ্টি করে। এটা বেশি দেখা যায় শিশুদের মধ্যে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় চিনির কারণে
গবেষণায় দেখা গেছে, চিনি খাওয়ার ফলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে। যার ফলে মানুষ সহজেই অসুখে আক্রান্ত হয় এবং অসুখ সারতে সময় লাগে। আবার চিনি দেহে ভিটামিন সি-এর সঞ্চয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করে যা কিনা দেহের ক্ষতিকর ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দমনে খুবই দরকারি।

মস্তিষ্কের অসুখ তৈরি করতে পারে চিনি
২০১৩ সালের এক গবেষণা বলছে, অতিরিক্ত চিনির পরিমাণ মানুষের আলঝেইমার এবং আরও অনেক মস্তিষ্কের রোগ সৃষ্টি করতে পারে। আলঝেইমার হচ্ছে মানুষের স্মৃতি ভুলে যাওয়ার এক ধরণের রোগ। অতিরিক্ত চিনির কারণে মানুষের স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে।

চিনি ক্যান্সারের জন্য দায়ী
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের এক গবেষণা বলছে, চিনি মানুষের ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে তরান্বিত করে। তবে এটি আসলেই কতটুকু সত্যি সেটি নিয়ে আরও অনেক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন