পৃথিবীর বড় বড় শহরগুলোর সীমানা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। শহরের বাতিগুলো উজ্জলতর হচ্ছে আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে মানুষ ও যানবাহনের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। নগরায়ন ক্রমশ বেড়ে চলছে আর শহরগুলো মেগাসিটিতে পরিণত হচ্ছে।
মানুষ দিন দিন শহরমুখী হচ্ছে। এর মূল কারণ, তারা কাজের খোঁজে যাচ্ছে, শিক্ষা অথবা উন্নত চিকিৎসার জন্য যাচ্ছে। অন্যরা আসে বাধ্য হয়ে যুদ্ধ অথবা কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে। শহরে একটু ভালো আয় করা আর ভালো থাকার আশায়ই তাদের এ শহরমুখী যাত্রা।
ইতিহাসে প্রথমবারের মত পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই এখন বসবাস করে শহরে। বর্তমানে ৩.৭ বিলিয়ন মানুষ বাস করছে পৃথিবীর কোন না কোন শহরে। ২০৫০ সালের মধ্যে সেটা দুই-তৃতীয়াংশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মূলত অনুন্নত আর উন্নয়নশীল দেশেই এই ঘটনা ঘটছে। কিন্তু যথাযথ পরিকল্পনা না থাকার কারণে এসব শহরে অসংখ্য সমস্যার জন্ম হচ্ছে। ‘দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম’ এই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছে।
শহরে অবস্থিত প্রায় ১ বিলিয়ন মানুষ থাকেন বস্তিতে। এদের মধ্যে ৭০ শতাংশেরই নেই উন্নত স্যানিটেশন সুবিধা। এমন পরিবেশের কারণে এসের ডায়রিয়া, কলেরা, মার্স আর H1N1 এর মত মারাত্মক সব রোগ দেখা দিচ্ছে।
এছাড়া বেকারত্ব আর জীবনধারণে উচ্চব্যয়ের কারণে তারা দারিদ্রতার ফাঁদে আটকা পড়ছেন। জীবনধারণের প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো যেমনঃ পানি, বিদ্যুৎ আর যানবাহনের মত জিনিসগুলো ক্রমেই দুর্লভ হয়ে পড়ছে। শুধু তাই নয়, শহরের বিভিন্ন যানবাহন এবং কারখানা থেকে নিঃসৃত কার্বন ডাই অক্সাইড আমাদের পরিবেশকে দূষিত করে তুলছে।
কিন্তু তারপরও শহরে মানুষের ভিড় কমছে না। মূলত একটি শহর তার আশেপাশের সকল সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু। এ কারণেই শহরমুখী মানুষের স্রােত বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে ভারসাম্যহীনতার কারণে বড়ো বিপর্যয় ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেজ্ঞরা।
সূত্র : আওয়ার লিটল আর্থ অবলম্বনে