নির্ঘুম রাত কাটে যে কারণে…

প্রতিদিন ভালো ঘুম সবারই খুব প্রয়োজন। পর্যাপ্ত ঘুম ছাড়া মানুষের স্বাভাবিক শারীরিক এবং মানসিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। ঘুম ঠিকমতো না হলে দেহে উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হতাশা, ওজন বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।

নানা কারণে অনেক সময়ই অামাদের ঘুম ভালোমতো হয় না। ঘুমের ব্যাঘাতের পিছনে দৈনন্দিন জীবনের অনেক সাধারণ কাজকর্মই দায়ী। চলুন জেনে নেয়া যাক আমাদের ঘুম বিনষ্টকারী কারণগুলো :

ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার
বিছানায় মোবাইল ফোনের ব্যবহার ক্ষতিকর। কোন হতাশাজনক বার্তা, ফোন বা এসএমএসের রিং টোনের শব্দ আপনার ঘুম নষ্ট করবে। শুধু তাই নয়, ঘুমাতে যাওয়ার সময় মোবাইল, ল্যাপটপ বা ই-বুক রিডারে বই পড়লেও তা আপনার ঘুমের ক্ষতি করবে।

গবেষণা বলছে, ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস থেকে যে নীল আলো বের হয় তা আপনার ঘুম আসতে দেরি করে, মেলাটোনিনের পরিমাণ কমিয়ে দেয় এবং সকালে ঘুম ভাঙতে সমস্যা করে। যদিও ব্যবহার করতে হয়, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে উজ্জ্বলতা কমিয়ে এবং চোখ থেকে ১৪ ইঞ্চি দূরে রেখে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে হবে।

ঘুমের অসামঞ্জস্যতা
অনেকে কাজের দিনগুলোতে কম ঘুমায় এবং ছুটির দিনগুলোতে বেশি ঘুমিয়ে তা পুষিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এটা খুবই ভুল। মানুষের উচিত প্রতিদিন পরিমাণমত এবং সমান পরিমাণে ঘুমানো। কাজের ফাঁকে সময় পেলে আধা ঘণ্টা- এক ঘণ্টা ঘুমিয়ে নেয়া যেতে পারে। এটা আপনার হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ, রক্তে চিনির পরিমাণ ঠিক রাখবে এবং আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।

এলকোহল পান
আমেরিকার স্লিপ ফাউন্ডেশনের মতে, ১২ শতাংশ মানুষ ঘুমানোর আগে এলকোহল পান করে ভালোভাবে ঘুমানোর জন্য। যদিও এলকোহল মানুষকে ঘুম পাড়াতে সাহায্য করে কিন্তু এই ঘুম ভালো হয় না। এর ফলে ঘুমের মান নষ্ট হয়, ঘুম আপনাকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে না। মানুষের র‍্যাপিড আই মুভমেন্টের কারণে ঘুম ব্যাহত হয় যার ফলে স্মৃতিভ্রংশ ঘটতে পারে।

শরীরের ব্যাথা এড়িয়ে যাওয়া
শরীরে ব্যাথা থাকলে তা আপনাকে গভীরভাবে ঘুমাতে দেবে না। জ্বালাপোড়া, মাথাব্যাথা, পিঠে ব্যাথা, বেকায়দায় ঘুমানো এসব আপনার গভীর ঘুমকে ব্যাহত করে।

নিয়মিত ব্যায়াম না করা
নিয়মিত ব্যায়াম আপনার ঘুমকে ভালো করবে এবং দিনের বেলার ঘুমঘুম ভাব থকে দূরে রাখবে। গবেষণা বলছে, সপ্তাহে ১৫০ মিনিটের ব্যায়াম ঘুমের ৬৫ শতাংশ উন্নতি ঘটায়। আরও দেখা গেছে, যেদিন মানুষ ব্যায়াম করে সেদিন তার ঘুম ভালো হয়।

অতিরিক্ত কাজ করা
অতিরিক্ত কাজ করার ফলে মানুষ পরিমাণমত ঘুমাতে পারে না। দিনে যারা ৫ ঘণ্টার কম ঘুমায় তাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। সেই সাথে হতাশা দেখা দেয়। গবেষকদের মতে, ১৮-৬৪ বছর বয়সের মানুষদের দিনে ৭-৯ ঘণ্টা এবং তার বেশি বয়সের মানুষদের দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।

মানসিক চাপে থাকা
উচ্চ মানসিক চাপ এবং পর্যাপ্ত ঘুম একে অন্যের সাথে সম্পর্কিত। মানসিক চাপের ফলে মানুষ স্বাভাবিকভাবে ঘুমাতে পারে না। দৈনন্দিন মানসিক চাপের ফলে মানুষের ঘুম আসতে দেরি হয় এবং ঘুমের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন