১৯৮০ সাল থেকে শুরু হয় তাপমাত্রার রেকর্ড রাখা। সে রেকর্ড অনুযায়ী ২০১৪ সাল ছিল পৃথিবীর উষ্ণতম বছর। গত শুক্রবার NASA এবং the National Oceanic and Atmospheric Administration কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গেছে এই তথ্য।(সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক)
এর আগে ২০০৫ এবং ২০১০ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল। বিংশ শতাব্দীর রেকর্ড ভেঙে গত বছর সমগ্র বিশ্বে তাপমাত্রা গড়ে বৃদ্ধি পায় ০.৬৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১.২৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট।
অস্ট্রেলিয়া থেকে এনকোরেঞ্জ আর দক্ষিণ ইউরোপ থেকে দক্ষিণ আমেরিকা পর্যন্ত যে আঞ্চলিক তাপমাত্রার রেকর্ড ছিল তাও গত বছর ভেঙে যায়। পৃথিবীর প্রতিটি অঞ্চলের তাপমাত্রা আলাদাভাবে বেড়েছে ২০১৪ সালে।
কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং অন্যান্য গ্রিন হাউস গ্যাসের অত্যধিক নিঃসরণের কারণেই এ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশ সম্মিলিতভাবে এখনো পর্যন্ত কোন ফলপ্রসূ সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি।
তবে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির তাপমাত্রা ২০১৪ সালে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। ১৯৯৮ সালের পর থেকে গতবছরেই সমুদ্রের পানির উপরিভাগের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউনিভার্সিটি অফ ইলিয়োনইসের বায়ুমণ্ডল বিজ্ঞানী ডোনাল্ড উইবলস বলেন, ‘মনে হচ্ছে আশি এবং নব্বইয়ের দশকের মত হবে, যখন প্রায় প্রতি বছরই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছিল’।
তবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে মানুষের ভূমিকা নিয়ে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেছেন। অথচ ২০০০ সালের পর থেকে ২০১৪ সালে তৃতীয়বারের মত পৃথিবীর সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। তবে একটা বিষয়ে বিজ্ঞানীরা একমত যে প্রতি দশকেই পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে।
প্রচুর পরিমাণে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করলে এমনটা যে ঘটবে তা গবেষকেরা অনেক আগেই ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন।
টেক্সাস এ অ্যান্ড এম ইউনিভার্সিটির জলবায়ু বিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু ডেসলার বলেন, ‘কাউকে যদি আপনি বলেন যে বৈদ্যুতিক সকেটে হাত দিলে সে শক খাবে, তারপরও যদি সে হাত দেয় এবং শক খায়, তাহলে এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই’।
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৪ সালের মত বছর আমাদের বিতর্ককে আরও বাড়িয়ে তুলবে। যারা বিশ্বাস করেন যে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে না, এসব পর্যবেক্ষণ তাদের সেসব ধারণা থেকে সরিয়ে আনবে’।