একটা দৃশ্য কল্পনা করা যাক, তুমি একটি অত্যাধুনিক ফাইটার প্লেন চালাচ্ছো। চালানোর এক পর্যায়ে তুমি বিমানের গতিপথকে উপরের দিকে নিয়ে গেলে। বেশি উপরের দিকে উঠে যাওয়ার কারণে বিমানের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকে। তোমার ক্ষেত্রেও সেটিই হলো। এক মুহূর্তে ঘুরতে শুরু করলো তোমার চারপাশের পৃথিবী। কোনোভাবেই আর নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছে না বিমানটিকে। প্রচন্ড গতিতে এটি নেমে আসছে নিচের দিকে। কি করবে তখন? বিমান তো আর বাস/প্রাইভেটকার না যে জানালা দিয়ে লাফ দিবে। ঠিক সেই মুহূর্তে জীবন বাঁচানোর একমাত্র পথ হচ্ছে বিমানের “ইজেকশন সিট”।
চলো জেনে নিই “ইজেকশন সিট” নিয়ে কিছু তথ্যঃ
একটি যুদ্ধবিমানের পাইলট, কো-পাইলট সহ যতজন ক্রু থাকেন, প্রায় সবার জন্যেই এই ব্যবস্থা করা থাকে। এর অন্য নাম “Escape Crew Capsule”। মূলত তাদের বসার সিটের নিচে ডিনামাইট বা এরকম বিস্ফোরক পদার্থের তৈরি মোটর থাকে এবং সাথে একটি প্যারাসুট যুক্ত থাকে।
বিমানটি কোনো ধরণের দুর্ঘটনায় পড়লে ভূমিতে আছড়ে পড়ার ঠিক আগে মুহুর্তে Ejection Button প্রেস করলে বিমানের সামনের অংশ থেকে ঐ সিট সহ ছিটকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। তখন ইজেকশন সিটের সাথে যুক্ত প্যারাসুটের মাধ্যমে নিরাপদভাবে মাটিতে নেমে আসে বিমানের ক্রু’রা। প্রায় সব যুদ্ধবিমান বা সামরিক বিমানে এই ব্যবস্থা থাকে।
১৯১৬ সালে এভেরার্ড কালথ্রপ নামক একজন বিজ্ঞানী সর্বপ্রথম এই ইজেকশন সিটের নকশা তৈরি করেন। এরপর বিভিন্ন সময় এর আধুনিকায়ন করা হয়।
আধুনিক ইজেকশন সিটগুলোকে “জিরো জিরো সিট” বলা হয়। আগেকার সময়ের ইজেকশন সিটগুলো মাটি থেকে কিছু উপরে কাজ করতো। কিন্তু এই আধুনিক সিটগুলো একবারে শূন্য উচ্চতা থেকেও উপরের দিকে নিক্ষেপ করতে সক্ষম।