বাদুড়রা বিপদে পড়েছে। উত্তর আমেরিকার প্রায় সব জায়গায় এই উড়ন্ত স্তন্যপায়ী প্রাণীগুলো এক ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আর এরা বিপদে পড়ার মানে হচ্ছে তা মানুষের জন্যও ক্ষতিকর।
বাদুড় মানুষকে বিভিন্ন দিক থেকে সাহায্য করে থাকে। এরা মশার মত অনেক ক্ষতিকর পতঙ্গ খেয়ে উপদ্রব কমায়। আবার অনেক প্রজাতি পরাগায়ন এবং বীজের বিস্তারে সাহায্য করে। এতে বনাঞ্চলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
দুর্ভাগ্যবশত, এই উপকারী প্রাণীটিই উত্তর আমেরিকায় বিপদে পড়েছে। হোয়াইট-নোজ সিনড্রোম নামের একটি প্রাণঘাতী রোগ ২০০৬ সাল থেকে প্রায় ৭০ লাখ বাদুড়ের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিনে দিনে এ রোগের প্রকোপ বেড়েই চলেছে।
এক ধরণের সাদা রঙের ফাঙ্গাস বা মোল্ডের কারণে এই রোগ ছড়ায়। বাদুড়ের নাক, কান এবং পাখার ত্বকে সংক্রমণ ঘটায় এগুলো। এই ফাঙ্গাস প্রাণীদের টিস্যু নষ্ট করে দেয়। এই অসুখ মোকাবেলা করতে গিয়ে বাদুড়দের হাইবারনেশন বা ঘুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে তাদের প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত শক্তি ব্যয় হয় যা তাদের অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং ক্ষুধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তবে ভালো খবর হচ্ছে, এই বাদুড়দের সাহায্য করার জন্য ইতোমধ্যেই কয়েকজন বিজ্ঞানী কাজ শুরু করেছেন। তারা ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে একটি চিকিৎসা বের করেছেন যেটা ফল বা সবজির পেকে যাওয়ার গতিকে মন্থর করে দেয়।
জীববিজ্ঞানী ক্রিস করনেলিসন ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে এই ব্যাকটেরিয়া পরীক্ষা করেন। তিনি বলেন এই ব্যাকটেরিয়া যদি কলার ত্বকে ফাঙ্গাসের বৃদ্ধি রোধ করতে পারে তাহলে সেটা সম্ভবত বাদুড়ের ত্বকেও একই কাজ করতে পারবে।
মিসৌরি এবং কেন্টাকি থেকে কিছু বাদুড় এনে পরীক্ষা করে দেখা যায় এই চিকিৎসা আসলেই কাজ করছে। ইতোমধ্যেই অসুস্থ ১৫টি বাদুড় সুস্থ হয়ে উঠেছে এবং সেগুলোকে আবার জঙ্গলে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
ভবিষ্যতে যাতে এই অসুখে বাদুড়েরা আর না পড়ে এবং গুহার বাস্তুতন্ত্র যাতে আর ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটা নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখন কাজ করে যাচ্ছেন।