যদি জিজ্ঞেস করা হয়, তাজিংডং পাহাড়ের উচ্চতা কত ? কিংবা বুর্জ খলিফা ভবনের উচ্চতা কত ? সহজেই বলে দেয়া যাবে। কিন্তু যদি ভূপৃষ্ঠ থেকে গতিশীল বা চলমান কোনো বস্তুর উচ্চতা জিজ্ঞেস করা হয়, তাহলে কিভাবে তা বলবো আমরা ? প্রতি মুহূর্তে এটি পরিবর্তন হতে থাকে। বিমান কিংবা রকেটের উচ্চতা মাপার ক্ষেত্রে তাই বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
যে যন্ত্রের সাহায্যে ভূপৃষ্ঠ থেকে গতিশীল বা চলমান কোনো বস্তুর উচ্চতা হিসাব করা হয়, তাকে অ্যাল্টিমিটার (Altimeter) বলা হয়।অ্যাল্টিমিটারের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। যেমন : প্রেসার অলটিমিটার, রাডার অ্যাল্টিমিটার ইত্যাদি। প্রেসার অলটিমিটার যা মূলত বিমানের উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাতাসের চাপের হ্রাসমানতা পরিমাপ করে। প্রেসার অলটিমিটার এর ভিতরে কপার বা বেরিলিয়াম ধাতু নির্মিত একটি Aneroid ক্যাপসুল থাকে। এটি ভিতরের বাতাস বের করে দেয়। বায়ুমণ্ডলে চাপের পরিবর্তনের সাথে সাথে এই ক্যাপসুলটি সঙ্কুচিত ও প্রসারিত হয়। উচ্চতার সাথে সাথে বায়ুমণ্ডলে চাপ কমতে থাকলে এটি গিয়ার ও লিভারের ব্যাসের সাহায্যে চাপের পরিবর্তন পরিমাপ করে।
আমরা জানি, ভূপৃষ্ঠ থেকে যত উপরের দিকে যাওয়া যায়, বায়ুমণ্ডলের চাপ তত কমতে থাকে। স্বাভাবিকভাবে কত উচ্চতায় কত বায়ুমণ্ডলীয় চাপ থাকে তা দেখার জন্য একটি চার্ট অনুসরণ করা হয়।এছাড়া, বিমানের বাইরের দিকে সংযুক্ত Aneroid ব্যারোমিটারের সাহায্যে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ মাপা হয়। তাই, আমরা যদি বায়ুমণ্ডলের চাপ জানতে পারি তাহলে খুব সহজে আমরা উচ্চতা জানতে পারি। যেমন, ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪০ মিটার উচ্চতায় চাপ হবে ১০১.৩২৫ কিলোপ্যাসকেল। আবার, ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪৬৯০ মিটার উচ্চতায় গেলে বায়ুমন্ডলীয় চাপ হবে ৫৮ কিলোপ্যাসকেল।
অর্থাৎ, বায়ুমণ্ডলীয় চাপ যত কম হবে, উচ্চতা তত বেশি হবে।
আরেক পদ্ধতিতে বিমানের উচ্চতা মাপা যায়। তা হলো, রাডার অ্যাল্টিমিটারের সাহায্যে। এ পদ্ধতিতে, এই যন্ত্র দিয়ে বেতার তরঙ্গ তৈরি করে মাটিতে পাঠানো হয়, যা ভূপৃষ্ঠে ধাক্কা খেয়ে আবার ওপরে ফিরে যায়। বেতার তরঙ্গের যাওয়া এবং আসার সময় ও গতিবেগ থেকে বিমানের উচ্চতা হিসাব করা হয়।
এছাড়া, ভূপৃষ্ঠ থেকে গতিশীল বা চলমান কোনো বস্তুর উচ্চতা হিসাব করার জন্য বিভিন্ন ধরণের মোবাইল অ্যাপ রয়েছে।