বিশ্বকাপের দল পরিচিতি: জিম্বাবুয়ে

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের ভেন্যুতে শুরু হয়েছে বিশ্ব সেরার লড়াই। এবার এতে অংশ নিচ্ছে ১৪টি দল। বিশ্বকাপের এই দলগুলোর ধারাবাহিক পরিচিতির শেষ (১৪তম) পর্বে আজ থাকছে জিম্বাবুয়ে।

১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপের ৩য় আসরে প্রথমবারের মতো খেলার সুযোগ পায় জিম্বাবুয়ে। গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৩ রানে জয় পায় তারা।

সেবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারতকে গ্রুপ পর্বে কোনঠাসা করে ফেলেছিলেন নবাগত জিম্বাবুয়ের বোলাররা। কিন্তু কপিল দেবের অপরাজিত ১৭৫ রানের সুবাদে অঘটনের হাত থেকে রক্ষা পায় ভারত।

উল্লেখ্য সেই ম্যাচে জিম্বাবুয়ে দলের অধিনায়ক ছিলেন ভারতের বর্তমান কোচ ডানকান ফ্লেচার। ওই আসরে ছয় ম্যাচ খেলে এক ম্যাচে জয় পেয়েছিল জিম্বাবুয়ে।

১৯৮৭ বিশ্বকাপে ছয় ম্যাচের একটিতেও জয় পায়নি। ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে আয়োজিত বিশ্বকাপে নয় ম্যাচে মাত্র একটি জয় নিয়ে তারা নয় নম্বরে থেকে বিদায় নেয়।

১৯৯৬ সালে এশিয়ায় অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপেও ছয় ম্যাচ খেলে মাত্র একটি জয়। এরপর ১৯৯৯ ও ২০০৩ সালের দুই বিশ্বকাপে দুবারই গ্রুপপর্ব পেরিয়ে সুপার সিক্সে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে তারা।

এরপর দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটে ধ্বস নামতে শুরু করে। প্রতিবাদে দলটির তারকা খেলোয়াড়রা অবসরে চলে যান। ফলে দিন দিন কেবলই পিছিয়ে পড়েছে জিম্বাবুয়ে। যে কারণে ২০০৭ ও ২০১১ বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বই পেরুতে পারেনি।

আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে জিম্বাবুয়ের বর্তমান অবস্থান ১০ম।

এ পর্যন্ত তারা ৮টি বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে মোট খেলেছে ৫১টি ম্যাচ, জিতেছে ১০টি, হেরেছে ৩৭টি, ১ টি টাই এবং ৩ টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে।
গত বছর বাংলাদেশ সফরে এসে টেস্ট ও ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ হয় তারা।

যার ফলশ্রুতিতে চাকরি হারান দলটির কোচ স্টিভেন ম্যাঙ্গোগা। নতুন কোচ হিসেবে যোগ দিয়েছেন ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপজয়ী কোচ ডেভ হোয়াটমোর। উল্লেখ্য তিনি ২০০৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৪ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের প্রথমবার বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়া হ্যামিল্টন মাসাকাদজার দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে কিছুটা হলেও তারা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে।

এবারের বিশ্বকাপে দলটির সেরা অস্ত্রও তিনি। শন উইলিয়ামস, ব্রেন্ডন টেইলর, ক্রেইগ আরভিন ও সিকান্দার রাজাও জিম্বাবুয়ের অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ। বোলিংয়ে পানিয়াঙ্গারা, চাতারা, উতসেয়া তাদের মূল ভরসা।

এবারের বিশ্বকাপে গ্রুপ ‘বি’তে তাদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও আয়ারল্যান্ড। ১৫ ফেব্রুয়ারি নিজেদের প্রথম ম্যাচে হ্যামিল্টনে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে জিম্বাবুয়ে।

এক নজরে জিম্বাবুয়ে দল
বিশ্বকাপে অংশগ্রহন: ১৯৮৩ বিশ্বকাপ থেকে সবগুলো
সেরা সাফল্য: ১৯৯৯ ও ২০০৩ সালের সুপার সিক্স
কোচ: ডেভ হোয়াটমোর (অস্ট্রেলিয়া)
এবারের বিশ্বকাপ স্কোয়াড: এলটন চিগুম্বুরা (অধিনায়ক), সিকান্দার রাজা, রেজিস চাকাবোভা, টেন্ডাই চাতারা, চামু চিভাভা, ক্রেইগ আরভিন, টাফাডজওয়া কামুনগোজি, হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, স্টুয়ার্ট ম্যাটসিকেনিয়েরি, সলোমন মিরে, টাওয়ান্ডা মুপারিয়া, টিনাশে পানিয়াঙ্গারা, ব্রেন্ডন টেইলর, প্রসপার উতসেয়া ও শন উইলিয়ামস
যারা নজর কাড়তে পারেন: সিকান্দার রাজা, হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, ব্রেন্ডন টেইলর
বিশ্বকাপ মিস করছেন এমন তারকা: ভুসি সিবান্দা ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন