প্রায় এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বিজ্ঞানীরা একটা জিনিস নিয়ে মাথা চুলকে যাচ্ছেন কিন্তু কোন কূলকিনারা করতে পারছেন না।
১৯০১ সালে গ্রীসের একটি দ্বীপ অ্যান্টিকিথেরাতে দুর্ঘটনাকবলিত এক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ থেকে ঘড়ির মতন দেখতে অদ্ভুত একটা যন্ত্র খুঁজে পাওয়া যায়। আর সে যন্ত্রটা নিয়েই এতো মাথা ঘামানো।
বিজ্ঞানীরা এই যন্ত্রটায় ব্যবহৃত কারিগরির নাম দিয়েছেন 'অ্যান্টিকিথেরা মেকানিজম'। যন্ত্রটার যন্ত্রাংশগুলো সব ব্রোঞ্জের তৈরি। ধারণা করা হচ্ছে জ্যোতির্বিজ্ঞানের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হত এ যন্ত্র। যেমনঃ চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ অথবা বিভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান নির্ণয় ইত্যাদি।
যন্ত্রটির কার্যক্রম দেখে বিজ্ঞানীরা এতোটাই অভিভূত হয়েছেন যে তারা ধাঁধায় পড়ে গিয়েছেন ‘পৃথিবীর প্রথম কম্পিউটার’ আসলে ঠিক কবে তৈরি হয়েছিল আর কারাই বা সেটা তৈরি করেছিল।
২০০৬ সালের এক গবেষণায় বলা হয়, যন্ত্রটি খ্রিস্টেরও জন্মের একশ থেকে দেড়শ বছর আগেকার। কিন্তু নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে যন্ত্রটার ভেতরে যে ক্যালেন্ডার আছে সেটা বলছে এটা খ্রিস্টের জন্মের ২০৫ বছর আগে তৈরি।
এ থেকেই ধারণা করা হচ্ছে অ্যান্টিকিথেরা মেকানিজম যে সময়কার বলে ধারণা করা হয়েছিল সেটা তারও ৫০ থেকে ১০০ বছর পুরনো। যদি তাই হয়ে থাকে তবে গবেষকেরা বলছেন যন্ত্রটি শুধুমাত্র ত্রিকোণমিতির উপর নির্ভর করেই তৈরি করা হয়নি।
কেননা ত্রিকোণমিতি আবিষ্কৃত হয় খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতকে। বরং এটি সম্ভবত পাটিগণিতের সূত্রের উপর নির্ভর করে নির্মিত হয়েছে যেটি কিনা গ্রীকরা ধার করেছিল ব্যবিলনিয়ানদের কাছ থেকে।
যন্ত্রটি কে বা কারা আবিস্কার করেছিলেন তা এখনো রহস্যই রয়ে গিয়েছে। তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে আর্কিমিডিস আর হিপারকাসের মত গ্রীসের বড় কোন বিজ্ঞানী এই যন্ত্র তৈরির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন, তবে এখনই এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছেনা।