মমির খাদ্যনালীতে পাওয়া গেলো ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া

৫ হাজার ২৫০ বছর পুরনো এক মমির খাদ্যনালীতে পাওয়া গিয়েছে মারাত্মক ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি।

প্রায় ২৫ বছর আগে অস্ট্রিয়ার টাইরোলিয়ান আল্পস পর্বতের বরফে পাওয়া খুঁজে গিয়েছিল এই মমি। তখন এর নাম দেয়া হয় ‘ওৎজি’। সম্প্রতি এই মমি থেকে নতুন জিনিস আবিষ্কার করেছেন গবেষকেরা।

একজন  বিজ্ঞানী জানান ওৎজি-র খাদ্যনালীর সংক্রমণে ভুগছিল যেটি সংঘটিত হয়েছিল 'হ্যালিকোব্যাকটার পাইলরি' নামক জীবাণুর কারণে। এই ব্যাকটেরিয়ার বংশধরেরা পাকস্থলীতে আলসার এমনকি ক্যান্সারও সৃষ্টি করতে পারে।

‘সায়েন্স’ পত্রিকায় প্রকাশিত এই পত্রের সহ-লেখক এবং ভিয়েনা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলবার্ট জিঙ্ক বলেন, ‘মমিটির জেনোম বিশ্লেষণ করে এই জীবাণুর উপস্থিতি আবিষ্কার করাটা সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। ওৎজির পাকস্থলীর কোন আবরণ অবশিষ্ট না থাকায় এখানে কিছু খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল’।

হ্যানোভার মেডিক্যাল ইন্সটিটিউটের অণুজীববিদ সেবাস্টিয়ান সুয়েরবাম বলেন, ‘৫ হাজার ২৫০ বছর আগেকার এক মমির পাকস্থলী থেকে এরকম জীবাণুর ডিএনএ উদ্ধার করতে পারাটা একটা বিশাল আবিষ্কার’।

মমির পাকস্থলীর সব ডিএনএ নিয়েই গবেষণা করেন বিজ্ঞানিরা।

হ্যালিকোব্যাকটার পাইলরি ব্যাকটেরিয়া ১৯৮০ সালে প্রথম আবিষ্কৃত হয়। যদিও প্রায় ১ লাখ বছর ধরে মানুষ এই জীবাণু বহন করছে।

বত্রমানে পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক মানুষের মধ্যেই এই জীবাণু পাওয়া যায়।

তবে যে ব্যাকটেরিয়া ওৎজির খাদ্যনালীতে পাওয়া গিয়েছে তা বর্তমানে মধ্য এবং দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের মাঝে দেখা যায়। একারণে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন ওৎজি আল্পসে বসবাসকারি বাসিন্দা নাও হতে পারে।

১৯৯১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরে আম্পস পর্বতমালায় আরোহণকালে একদল পর্বতারোহী ৩ হাজার ২০৮ মিটার উঁচুতে এক হিমবাহতে এই মমিটি খুঁজে পায়। ৫ হাজার বছরের বেশি সময় ধরে এই মমি সেখানে পড়ে ছিল। কিন্তু প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে মমিটি তখন সুরক্ষিত অবস্থায় ছিল।

এর আগে গবেষকেরা আবিষ্কার করেন, ওৎজিকে হত্যা করা হয়েছিলো। তার কাঁধে ধনুকের মাথার একটি অংশ পাওয়া গিয়েছিল। মারা যাওয়ার কিছু আগে সে ছাগলের মাংস খেয়েছিল। তার ডিএনএ বিশ্লেষণ করে তার রক্তের গ্রুপ এবং চোখের রঙ জানা যায়।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন