রোমাঞ্চকর খেলার ভুবনেঃ Paragliding

মানুষের শখ সীমাহীন। রঙ বেরঙের শখ, স্বপ্ন থাকে মানুষের। দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়ানো বা রোমাঞ্চকর কিছু করা এগুলো মানুষের পছন্দের তালিকায় উপরের দিকে থাকে। এমনই একটি রোমাঞ্চকর খেলা হচ্ছে Paragliding

ঘটনাটা ১৯৫২ সালের, Domina Jalbert সর্বপ্রথম বহু কোষী আধুনিক প্যারাসুট উন্নয়ন করেন যা মানুষ তার ইচ্ছা মতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। ঠিক এর পরপরই ১৯৫৪ সালে Walter Neumark এই আবিষ্কার থেকে ভবিষ্যৎ বানী করেন যে, একদিন এই প্যারাসুটই মানুষের জীবনে এক অন্যতম আবিষ্কার হিসেবে বিবেচিত হবে। Neumark আরও বলেন যে, মানুষ এর সাহায্যে সহজে  বিশাল বিশাল পর্বতে থেকে লাফ দিয়ে নিজের ইচ্ছামতো  বাতাসে ভেসে থাকবে ও প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে। Neumark এর ভবিষ্যৎ বানী কিন্তু বিফল হয় নি। আজ এই প্যারাসুটের ফলে অ্যাডভেঞ্চারমূলক এক স্পোর্টস এর জন্ম হয়েছে যার নাম প্যারাগ্লাইডিং।

মজার ব্যাপার হল, কোন প্রকার ইঞ্জিন ব্যাবহার না করে প্যারাগ্লাইডার কয়েক ঘণ্টা ধরে বাতাসে ভেসে থাকতে পারে এবং কয়েকশো কিলোমিটার পর্যন্ত পরিভ্রমণ করতে পারে। তবে এত দীর্ঘ সময় বাতাসে ভেসে থাকার জন্য যথেষ্ট দক্ষ প্যারাগ্লাইডার হতে হয় অবশ্যই।

এছাড়া, কেউ যদি শখে প্যারাগ্লাইডিং করতে চাই তার সাথে একজন দক্ষ পাইলট থাকেন। পাইলট প্যারাগ্লাইডিং এর সময় হার্নেসে বসে থাকেন। প্যারাগ্লাইডিং এর জন্য এর Wing বা পাখার সঠিক আকৃতি বজায় রাখা দরকার। পাখাকে ক্যানপিও বলা হয়ে থাকে যা নাইলল বা পলিস্টারের কাপড়ের তৈরি হয়ে থাকে। বিভিন্ন সাস্পেনশন লাইন, বেলুনের ভিতরে প্রবেশ করা বায়ুর চাপ, এবং বেলুনের বাইরের চারপাশের বায়ুর চাপ প্যারাগ্লাইডিং এর পাখার আকৃতি বজায় রাখতে সহায়তা করে।

paragliding-5

প্যারাগ্লাইডিং এর উড্ডয়ন এর সময় তীব্র বায়ু প্রবাহের মধ্যে পাখা সঠিক অবস্থানে রাখতে হয়। বাতাসের কারণে পাখা আস্তে আস্তে পাইলটের উপরে উঠে এবং এক সময় পাইলটকেও ভূমির উপরে তুলে নেয়। একটা নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে পাইলট হার্নেসে বসতে পারে। প্যারাগ্লাইডাররা মূলত দুই ধরণের উড্ডয়নের পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে। যথাঃ Forward Launch এবং Reverse Launch।

প্যারাগ্লাইডিং আনন্দদায়ক ও রোমাঞ্চকর হলেও এর মাঝে জীবনের ঝুঁকি অনেক বেশী থাকে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১৯৯৪-২০১০ সালের মধ্যে  প্রায় ১০,০০০ জন দক্ষ প্যারগ্লাইডারের মধ্যে গড়ে সাতজন পাইলট মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। এমনকি ২০১০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন প্যারাগ্লাইডার পাইলট মৃত্যুবরণও করেন। তাই, প্যারাগ্লাইডিং এর সময় অবশ্যই নিজেকে এবং প্যারাসুটকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং সতর্কতা বজায় রাখতে হবে। মাঝে মাঝে অল্প সময়ের অভিজ্ঞতা এবং খারাপ আবহওয়ার কারণেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

আরেকটি মজার তথ্য হচ্ছে, প্রত্যেক বছর প্যারাগ্লাইডিং ওয়ার্ল্ড কাপ অ্যাসোসিয়েশন (PWCAপ্যারাগ্লাইডিং বিশ্বকাপ আয়োজন করে থাকে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন