লড়াইটা শুধু রিংয়ে নয়, ওজন নিয়েও

বক্সিং এমন একটি খেলা, যেখানে শরীরের আকার আর ওজনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। কল্পনা করেন যে বিশাল আকৃতির ওজনদার এক ব্যক্তির সাথে ছোটখাট চিকন গড়নের এক লোকের বক্সিং ম্যাচ হচ্ছে ! বুঝতেই পারছেন যে ওজনদার ব্যক্তিটির জয়লাভ করার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এই জন্যই বক্সারদেরকে তাদের শরীরের ওজনের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়। যেমন – হেভিওয়েট, লাইটওয়েট, ওয়েলটারওয়েট, ফ্লাইওয়েট ইত্যাদি।

বক্সিং খেলায় সুনির্দিষ্টভাবে বক্সারের ওজন ভাগ করা থাকে। যেমন –ক্রুজারওয়েট টাইটেলের জন্য কোন বক্সার লড়তে চাইলে তার ওজন সর্বোচ্চ ২০০ পাউন্ড বা ৯০.৭ কেজি হতে পারবে আর সর্বনিম্ন ১৭৫ পাউন্ড বা ৭৯.৪ কেজি হতে হবে। অর্থাৎ, বোঝাই যাচ্ছে যে প্রতিটি ক্লাসের একটি সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ওজন আছে। শুধুমাত্র হেভিওয়েট টাইটেলের জন্যই কোন সর্বোচ্চ ওজন নেই।

সাধারণত প্রফেশনাল বক্সিং ম্যাচের ২৪ ঘন্টা আগে বক্সারের ওজন পরিমাপ করে দেখা হয়। সেই সময় বক্সারের ওজন যদি মানদণ্ডের চেয়ে কম বা বেশি হয়ে যায় তাহলে তাকে ম্যাচের জন্য আনফিট ঘোষণা করা হয়। ওজন পরিমাপের এই ব্যাপারটি বক্সারদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধুমাত্র এই দিনের জন্য প্রস্তুতি নিতেই একজন বক্সার ৪৮ ঘণ্টা ধরে ওজন কমানোর জন্য বিশেষ ট্রেনিং করে থাকেন। বক্সার তাঁর ওজন মূলত ডিহাইড্রেশনের মাধ্যমে কমিয়ে থাকেন। শরীরের বেশিরভাগ অংশই পানি দখল করে আছে বলে ডিহাইড্রেশনের মাধ্যমে করা শরীরের ওজনে বড় আকারে প্রভাব পড়ে। ওজন কমার সাথে সাথে শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে যার ফলে ম্যাচ হেরে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। তাই ওজন পরিমাপের পর বক্সারদেরকে ২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয় আবার রিহাইড্রেশনের মাধ্যমে শরীরের ওজন ফিরিয়ে আনতে।

ওয়ার্ল্ড বক্সিং অ্যাসোসিয়েশন এবং ওয়ার্ল্ড বক্সিং কাউন্সিল বর্তমানে প্রফেশনাল বক্সিংকে মোট ১৮টি ওজন শ্রেণীতে ভাগ করেছে। সর্বনিম্ন ক্লাস লাইট মিনিমামওয়েট/ অ্যাটমওয়েট ক্লাসের জন্য বক্সারের সর্বোচ্চ ওজন হতে পারবে ১০২ পাউন্ড বা ৪৬.৩ কেজি। সুপার লাইটওয়েট ক্লাসের সর্বনিম্ন ওজন ১৩৫ পাউন্ড বা ৬১.২ কেজি বা আর সর্বোচ্চ ওজন ১৪০ পাউন্ড বা ৬৩.৫ কেজি। আবার সুপার ওয়েলটারওয়েট ক্লাসের সর্বনিম্ন ওজন ১৪৭ পাউন্ড বা ৬৬.৭ কেজি আর সর্বোচ্চ ওজন ১৫৪ পাউন্ড বা ৬৯.৯ কেজি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন