আমেরিকান অ্যালিগেটর(আমেরিকা ও চীনের উষ্ণ অঞ্চলের নদী বা হ্রদ বসবাসকারী কুমির) প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। The United States Fish and Wildlife Service ১৯৬৭ সালে এদেরকে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।
তখন থেকেই এদের সংরক্ষণে কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়। সৌভাগ্যবশত সে পদক্ষেপগুলো কাজে লাগে এবং ২০ বছর পর ঝুঁকিপূর্ণ প্রাণীদের তালিকা থেকে বের হয়ে এসেছে এই প্রজাতির কুমির।
বর্তমানে এই সরীসৃপ প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা প্রায় ১০ লাখেরও বেশি। কিন্তু হ্রদ এবং নদীর আশপাশে এদের আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে এরা এখনো হুমকির মুখে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পূর্ব বন্য অঞ্চলে বাস করে আমেরিকান অ্যালিগেটররা। বিশেষ করে ফ্লোরিডা এবং লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের নদী, হ্রদ, পুকুর বা এ জাতীয় স্যাঁতস্যাঁতে অঞ্চলে সহজেই এদের দেখা মেলে। ডাঙ্গায় চলাফেরায় এরা কিছুটা অদক্ষ হলেও পানিতে এরা দুর্দান্ত সাঁতারু। বড়বড় আঙুল আর শক্তিশালী লেজের কারণে এরা সহজেই পানিতে সাঁতার কাটতে পারে।
একটা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ কুমির গড়ে ১০ থেকে ১৫ ফুট লম্বা হয়। এদের শরীরের অর্ধেকটাই হচ্ছে শক্তিশালী একটা লেজ। যদিও একটা কুমির ৫০০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে তবে গড়ে একটি পুরুষ কুমির আড়াইশো কেজি হয়ে থাকে। মেয়ে কুমির ওজনে আরও কম হয়।
মেয়ে কুমিরগুলো দেখতে ভয়ংকর হলেও, মা হিসেবে খুবই ভালো। এরা জলাশয়ের কাছেই বা পাড়ে বাসা তৈরি করে সেখানে ডিম পাড়ে। ডিম ফোটার আগ পর্যন্ত সেগুলোর উপর কড়া পাহারায় থাকে কুমির দম্পতি। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়ে শব্দ করতে শুরু করলেই মা তার বাচ্চাগুলোকে মুখে করে নিয়ে নিকটবর্তী জলাশয়ে পানিতে ছেড়ে দেয়।
জন্মের সময় বাচ্চাগুলো সাধারণত ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি লম্বা হয় এবং খুব নাজুক থাকে। এ সময় অন্যান্য শিকারি প্রাণীদের থেকে এদেরকে রক্ষা করে মা কুমির। ২ মাস পর্যন্ত বাচ্চারা মায়ের সাথেই থাকে। এরপর এরা নিজেরাই বাঁচতে পারে।