সেন্ট যোসেফে খুদেদের উদ্ভাবনী প্রদশর্নী

পাশাপাশি দুইটি ভবন। ভবনের কক্ষগুলোতে চোখ মেললেই দেখা মেলে হরেক রকমের প্রদশর্নী। কারো প্রদশর্নী সবুজ এবং বাসযোগ্য পৃথিবী নিয়ে। কারো আবার আপন বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কীভাবে আরো সহজে সুরক্ষিত করা যায় তা নিয়ে। শুধু এসব প্রদশর্নী-ই নয় এর সঙ্গে রং বেরঙের স্ক্র্যাপবুক, সুডোকু, বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক অলিম্পিয়াড এবং গেইম কনটেস্টে অংশ নিয়েছেন প্রতিযোগিরা।

ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এমন একটি আয়োজন হয়ে গেলো সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারী স্কুলে। স্কুলটির ঐতিহ্যবাহী ক্লাব সিনটিলা সায়েন্স ক্লাবের আয়োজনে ৫৯তম বিজ্ঞানমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবার।

১৯ মার্চ সকালে ‘সায়েন্স ফর সাসটেইনেবল গ্রিন’ শিরোনামে এবারের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উৎসবের প্রধান অতিথি সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের সাবেক ছাত্র বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের [বুয়েট] সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. কবীরুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি বাংলা ক্যাটের কর্ণধার এবং নির্বাহী পরিচালক নাজমা হক।

এবারের উৎসব উদ্বোধনের পর পরই বেশ জমে উঠে বলে জানান আয়োজক ক্লাব সিনটিলা সায়েন্স ক্লাবের সভাপতি সৈয়দ তানভীর আহমেদ। চলমান হরতাল কিংবা অবরোধ উৎসবে কোনো প্রভাব ফেলেছে কিনা জানতে চাইলে চ্যাম্পস টোয়েন্টিওয়ানকে তিনি জানান, হরতাল বা অবরোধের কোনো প্রভাবই পড়েনি এবারের উৎসবে। বরং রীতিমতো উৎসব এবং নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন এবারের বিজ্ঞান উৎসবে।

বিভিন্ন স্কুল থেকে প্রায় তিন হাজার পাঁচশ শিক্ষার্থী এবারের বিজ্ঞান উৎসবে অংশ নেওয়ার আবেদন করে। এর মধ্যে প্রায় তিন হাজারের মতো শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে উৎসবে।

সেন্ট যোসেফ স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর তিন ক্ষুদে শিক্ষার্থী কাসিফ মাহমুদ, মেহেদী হাসান শিফা ও আপন চৌধুরী তৈরি করেছে একটি সৌরওভেন। এটা দিয়ে কী কী রান্না করা যায় জানতে চাইলে তারা জানায়, প্রায় সব ধরনের খাবার রান্না করা যায় এই সৌরওভেন দিয়ে।
 
একটি আদর্শ খামার, অ্যালগি থেকে বায়োফুয়েল তৈরি, থার্মাল সোলার ফার্ম, স্মার্ট অ্যাপ সিকিউরিটিসহ বিভিন্ন নামে নানারকম প্রকল্প নিয়ে অংশ নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। হলিক্রস গার্লস হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণীর তিন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলো ‘সুন্দরবন বাঁচাও’ প্রকল্প নিয়ে।

তারা জানায় সুন্দরবনে তেলবাহী ট্যাংকার ডুবিতে আর যাতে কোনো পরিবেশ এবং প্রতিবেশগত ক্ষতির মুখোমুখি হতে না হয় এবং এ ধরনের দুর্ঘটনায় দ্রুত তেল নিঃসরনের ব্যবস্থা করতে পারা যায় সেটাই তুলে ধরেছেন তাদের প্রকল্পে। শুধু তাই নয় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই সবুজ বনের সব ধরনের হুমকি মোকাবেলার একটি প্রকল্প তুলে ধরেছেন তারা প্রদশর্নীতে।

তথ্যপ্রযুক্তির প্রতি তরুণদের আরো আকষর্ণী করে তুলতে এবারই প্রথমবারের মতো উৎসবে যোগ করা হয়েছিলো গেমিং কনটেস্ট।

তিনব্যাপি আয়োজিত এই বিজ্ঞান উৎসব শেষ হয় গতকাল শনিবার বিকাল পাঁচটায়। এদিন বিজয়ী প্রতিযোগিদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন  বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. তৈমুর রহমানবাংলা ক্যাটের সিইও এবং এমডি নাজিম এ হক।   

ছবি : লেখক

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন