১০ জুলাই, ২০১৩ সাল। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যেকার অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিন। অস্ট্রেলিয়ার স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডোক্স বোলার অ্যাশটন অ্যাগার যখন বোলিং করা শুরু করলো তখন টিভির পর্দায় চাকার মতো একটি ছবি ভেসে উঠলো। আর চাকার ভিতরে লেখা 2338 RPM ! বলতে পারবে এর দ্বারা কি বুঝানো হচ্ছে ?
এটা মূলত ক্রিকেটের একটি বিশেষ প্রযুক্তি যার সূচনা ২০১৩ সালে অ্যাশেজ সিরিজের মধ্যে দিয়ে। এই প্রযুক্তির নাম বল স্পিন আরপিএম বা Ball Spin RPM। স্কাই স্পোর্টসের সৌজন্যে ২০১৩ সালে অ্যাশেজ সিরিজে এই প্রযুক্তি প্রথম ব্যবহার করা হয়।
RPM এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Revolutions per Minute। বিজ্ঞানের ভাষায়, RPM দ্বারা বুঝানো হয় কোন যন্ত্র প্রতি মিনিটে একটি নির্দিষ্ট অক্ষে কতবার ঘুরছে।
বল স্পিন আরপিএম প্রযুক্তির মাধ্যমে একজন স্পিনারের বোলিং এর ঘূর্ণনের মাত্রা বোঝানো হয়। অর্থাৎ, এ প্রযুক্তির মাধ্যমে বল রিলিজ করার পর তা কত জোরে ঘুরছে সেটা জানা যায়। এছাড়া, বল প্রতি মিনিটে কতটুকু ঘুরছে বা কোনদিকে ঘুরছে তা দেখানো হয় এর মাধ্যমে।
এই প্রযুক্তির পেছনে রয়েছে একটি দ্রুত গতির ক্যামেরা যা বলের ওপর ফোকাস করে থাকে। সঠিকভাবে এই প্রযুক্তির ব্যাখ্যা না দেয়া থাকলেও ধারণা করা হয় Hawk-Eye থেকে প্রাপ্ত ছবি পর্যালোচনা করে বলের স্পিন মাপা হয়। অর্থাৎ, দ্রুত গতির উচ্চ ফোকাস সম্পন্ন ক্যামেরার মাধ্যমে স্পিন বলের আলাদা আলাদা অবস্থা ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে ক্যামেরার সবগুলো ফুটেজ একত্র করে রিয়েল টাইম রিপ্লের দ্বারা ত্রিমাত্রিক অণুলিপি তৈরী করা হয়। এই ত্রিমাত্রিক অণুলিপি দ্বারা বল কোনদিকে স্পিন করছে তা বুঝা যায়।
এছাড়া, উচ্চ ফোকাস সম্পন্ন ক্যামেরা যখন কোন স্পিনার বল করে তখন তার গতিপথে তরঙ্গ প্রেরণ করে। বলটি পিচ করার পরে তরঙ্গটি যখন বলের গতিপথে বাধাপ্রাপ্ত হয় তখন ক্যামেরাটি তরঙ্গের প্রতিধ্বনি Capture করে বলে দেয় বলটি কতটুকু পরিমাণ ঘুরেছে।
অর্থাৎ, একইসাথে একজন স্পিন বোলারের বোলিং এর ঘূর্ণনের মাত্রা বা গতি এবং বোলার কোন দিকে কতটুকু বল স্পিন করেছে তা নির্ণয় করা যায় বল স্পিন আরপিএম এই প্রযুক্তির বদৌলতে।