সন্তান কথা শুনছে না, এমন অভিযোগ অনেক বাবা-মায়ের। কিন্তু সন্তানের ভালোর ভালোর জন্যই বাবা-মায়েদের এতো চেষ্টা। কী করলে সন্তানের ভালো হবে সে চিন্তায় উদগ্রীব থাকেন প্রতিটি বাবা-মাই। কিন্তু এটা করতে গিয়ে সন্তানকে চাপে ফেলে অনেকেই আস্তে আস্তে অপ্রিয় হতে থাকেন ছেলেমেয়ের কাছে।
সন্তানের ভালোর জন্য শাসনের করার কারনে সেই সন্তানই তাকে অপছন্দ করতে শুরু করেছে, এমন তথ্য জানার পর কোন অভিভাবকই স্বস্তিতে থাকেন না। একদিকে ভালো মা-বাবা হওয়ার বাসনা অন্যদিকে সন্তানের ভবিষৎ। তাহলে কী করবেন তারা?
সন্তানকে মানুষ করার চেষ্টা, একইসঙ্গে মন যোগানো দুটোই যে চাই। এমন দুমুখো সমস্যায় করণীয় সর্ম্পকে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহজাবিন হক।
০ সবার সামনে সন্তানের কোনো ব্যর্থতার বিষয়ে সমালোচনা করবেন না।
০ সন্তানের গায়ে হাত তুলবেন না। কোনো কিছু শুনতে না চাইলে সময় দিন ওকে। পরে বুঝিয়ে বলুন সে যা করছে তা তার জন্য কোনোভাবেই ভালো ফল বয়ে আনবে না।
০ সন্তানের মঙ্গলের জন্যই শাসন কিন্তু তাতেই বিপত্তি। এমনটা হওয়া খুব স্বাভাবিক। তাই চেষ্টা করুন সন্তানের একজন বন্ধু হয়ে উঠতে। সন্তানের সঙ্গে কথা বলুন, গল্প করুন। সময় পেলেই ওদের সঙ্গে আড্ডায় মেতে উঠুন।
০ আপনার সন্তান যাদের সঙ্গে মিশছে তাদের সঙ্গেও কথা বলুন। তাদের কাছ থেকে এক ফাঁকে জেনে নিন তাদের পারিবারিক প্রেক্ষাপট।
০ সন্তানের ভালো লাগা, মন্দ লাগার বিষয়টা খেয়াল রাখুন। ওর ভালো-মন্দের ব্যাপারে সচেতন হয়ে তারপরই কেবল হস্তক্ষেপ করুন।
০ সংসারে সুখ-দু:খ, আনন্দ-বেদনার কত ঘটনাই তো ঘটে। সেগুলো ছেলেমেয়েদের সঙ্গে শেয়ার করুন।
০ সন্তানের চাওয়াকে সম্মান দিন। বয়স বাড়লে তাদের পৃথিবীটা বড় হয়। তাদের জগতের সঙ্গে মানিয়ে নিন।
০ পারিবারিক কোনো সিদ্ধান্ত নিতে সন্তানের মতামত নিন। এতে করে আপনার প্রতি ও পরিবারের প্রতি সে আরো দায়িত্ব অনুভব করবে।
০ নিজেদের পছন্দ-অপছন্দ জোড় করে সন্তানের উপর চাপিয়ে দিবেন না।
০ সন্তানের কাছে তার সাধ্যের বাইরের কিছু প্রত্যাশা করবেন না।
০ শুধু পড়াশোনায় ভালো হওয়াটাই যেনো সন্তানের কাছে একমাত্র শর্ত না হয়ে দাঁড়ায় সে বিষয়ে সচেতনার সঙ্গে খেয়াল রাখুন।
০ বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওর জগতে ওকে মিশতে দিন। তাকে আঁকড়ে ধরে রাখবেন না। সন্তানকে স্বাধীনতা দিন।
০ আপনার নিজের আচরণ সম্পর্কে সচেতন থাকুন। মনে রাখবেন, ছোটরা অনুকরণ প্রিয়। সন্তানের ভেতর যে ধরনের আচরণ দেখতে চান নিজেও সেই আচরণ করুন।
০ বাড়ির সব সদস্যের জন্য একই নিয়ম মেনে চলার চেষ্টা করুন।
০ সন্তানের সব সমস্যার সমাধান নিজে করে দেবেন না। সমস্যায় পড়লে ওকে ভাবতে দিন। সমস্যার সমাধান খুজে বের করতে। প্রয়োজনে আপনি ওকে সাহায্য করুন।