ভূমিকম্পের পরপরই আসে আফটারশক। বিশেষজ্ঞরা সবসময়ই সতর্ক করেন আফটারশকের ব্যাপারে। কিন্তু কেন ঘটে এই আফটারশক? আর কতটুকু হুমকি তা আমাদের জন্য?
ভূমিকম্প এবং আফটারশকের মধ্যে পার্থক্য
ভূমিকম্পের পরপরই যে কম্পনগুলো অনুভূত হয় সেগুলোকেই আফটারশক বলা হয়। তবে আফটারশক আসল ভূমিকম্পের চেয়ে মৃদু হবে না তীব্র হবে সেটা নিশ্চিত নয়। তবে ভূমিকম্প আর আফটারশক কিন্তু একই জিনিস।
কেননা দুটিই কম্পন এবং ভয়াবহ। পার্থক্য শুধু আফটারশক পরে ঘটে। বিশেষজ্ঞরা ফোরশক (ভূমিকম্পের পূর্বে কম্পন) আর আফটারশকের মধ্যে পার্থক্য দেখিয়েছেন। তবে আফটারশক মূল ভূমিকম্পের কিছু পরেই বা একদিন পরে এমনকি এক মাস পরেও হতে পারে।
আফটারশক কতটা শক্তিশালী হতে পারে?
ভূমিকম্পনের পূর্বে যে 'ফোরশক' হয় তা খুবই মৃদু, টেরই পাওয়া যায় না বলতে গেলে। কিন্তু ভূমিকম্প পরবর্তী আফটারশক মূল ভূমিকম্পের মতই খুব ভালোভাবে অনুভব করা যায়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রাও থাকে বেশি। এপ্রিলের ২৫ এপ্রিল তারিখ নেপালে ৭.৮ মাত্রার এক ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে যা ভারত এবং বাংলাদেশেও অনুভূত হয়।
এর মধ্যে অনেকগুলো আফটারশক অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে বড়ো আফটারশক হয় ১২ মে। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৭.৩ (ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের সংবাদ অনুযায়ী)। বাকীগুলোর মধ্যে মাত্র ২টি আফটার শকের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার উপরে ছিল।
কেন আফটারশক ঘটে?
একটা জায়গায় ভূমিকম্প ঘটার কারণ একদিন বা দুইদিনে সৃষ্টি হয় না। অনেক বছর ধরে মাটির নিচের প্লেটগুলো স্থান পরিবর্তন করতে করতে একসময় বড় ধরণের একটা ঝাঁকুনি দিয়ে তা নতুন একটি অবস্থানে আসে।
এই ঝাঁকুনির পর আর অনেকগুলো ছোট ছোট ঝাঁকুনির মাধ্যমে প্লেটটি তার নতুন অবস্থানে থিতু হয়। মূলত একারণেই মূলত আফটার শকগুলো আসে।
নেপাল বা হিমালয় অঞ্চলে যে টেকটোনিক প্লেটগুলো রয়েছে সেগুলো পৃথিবীর অন্যতম সঞ্চারণশীল প্লেট। প্রতিবছর ইন্ডিয়ান প্লেট ৪ সেন্টিমিটার করে ইউরেশিয়ান প্লেটের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। কন্টিনেন্টাল প্লেটের হিসেব অনুযায়ী, এটা খুবই দ্রুত।
আফটারশক কি আগে থেকে জানা যায়?
নেপালে ৮০ বছর আগে একটি বিশাল ভূমিকম্প হয়েছিল। সে হিসেবে পরবর্তী বড় ভূমিকম্প কবে হতে পারে সে ব্যাপারে একটা আন্দাজ হয়তো করা যায়। কিন্তু অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের মত ভূমিকম্প কখন হতে পারে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলা যায় না। সে হিসেবে আফটারশক কখন ঘটবে তাও নিশ্চিতভাবে বলা দুষ্কর।
তবে কোথাও একটা বড় ভূমিকম্প হওয়ার পর সেখানকার মানুষদের সচেতন থাকাটাই ভালো, কেননা ভূমিকম্পের পরপরই আফটারশক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।