নতুন এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পৃথিবীর অধিকাংশ সামুদ্রিক পাখি ইদানীংকালে খাবার হিসেবে গ্রহণ করছে প্লাস্টিক। বিভিন্নভাবে সমুদ্রে গিয়ে পড়া এসব প্লাস্টিক বর্জ্য সামুদ্রিক পাখিদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Proceedings of the National Academy of Sciences (PNAS) নামক জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা বলছে, প্রায় সব সামুদ্রিক পাখির পাকস্থলীতেই প্লাস্টিকের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে অবস্থা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
“Threat of plastic pollution to seabirds is global, pervasive, and increasing” নামের এই গবেষণা থেকে জানা গেছে, ২০৫০ সালের মধ্যে ৯৯ শতাংশ সামুদ্রিক পাখির পাকস্থলীতে প্লাস্টিকের উপস্থিতি পাওয়া যাবে।
গবেষণাটি পরিচালনা করেছে ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন, ইউনিভার্সিটি অফ নিউ সাউথ ওয়েলস এবং Commonwealth Scientific and Industrial Research Organization ।
তারা ১৮৬ প্রজাতির পাখির আবাসস্থলের উপর পরীক্ষা চালিয়েছে যে জায়গাগুলোতে বছরের পর বছর ধরে প্লাস্টিক জমে ছিল।
গবেষকদের মধ্যে অন্যতম ব্রিটা ডেনিজ হারডেস্টি বলেন, ‘এইসব প্লাস্টিক খাওয়ার ফলে পাখিদের নাড়িভুঁড়ি আটকে যেতে পারে এমনকি পাকস্থলি ক্ষতিগ্রস্তও হতে পারে। কিন্তু যেহেতু প্লাস্টিকগুলো পানিতে ভাসে তাই খাওয়ার জন্য পাখিরা সেদিকেই নজর বেশি দেয়’।
প্লাস্টিকে উপস্থিত থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানও পাখিদের দেহের ক্ষতির অন্যতম কারণ।
তবে হারডেস্টি আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘আমরা আগে আরও বেশি পরিমাণে প্লাস্টিকের উপাদান পেতাম পাখিদের পেটে। বিষয়টা নিয়ে আমরা প্লাস্টিক কারখানার মালিকদের সাথে কথা বলি এবং তাদেরকে উপদেশ দেই প্লাস্টিক বর্জ্য আরও ভালভাবে রিসাইকেল বা পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করার জন্য। এর ফলে আমরা পাখির পাকস্থলীতে প্লাস্টিকের পরিমাণ আগের চেয়ে কম পাচ্ছি’।
তার মতে প্লাস্টিক বর্জ্য সমুদ্রে গিয়ে যাতে না পড়ে তার জন্য আমাদের সবারই কিছু দায়িত্ব রয়েছে। তিনি বলেন, ‘সমুদ্রে যে প্লাস্টিকটি গিয়ে পড়ে সেটি অবশ্যই কারো না কারো হাতে ছিল। আমাদের উচিত প্লাস্টিকের দ্রব্য যেখানে সেখানে না ফেলে সেটি রিসাইকেল করা যায় এমন করা জায়গায় দিয়ে দেয়া’।