কোন পর্বতের চূড়ায় উঠা মানে হচ্ছে এর অর্ধেক পথ অতিক্রম করা। জীবন নিয়ে নিরাপদে আবার নিচে ফিরে আসতে পারলেই সেটা হয় পর্বতশৃঙ্গ জয় করা।
প্রথম আমেরিকান নারী হিসেবে এবার অতিরিক্ত অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়াই এভারেস্ট জয় করেছেন মেলিসা আরনট। ২৩ মে তারিখ ২৯০২৯ ফুট উঁচু পৃথিবীর এই সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ জয় করে নিজের আজীবনের স্বপ্ন পূরণ করেন তিনি।
তবে অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়া এভারেস্ট জয়ে আরনট প্রথম নাকি দ্বিতীয় সেটা নিয়ে কিছুটা মতভেদ রয়েছে। ১৯৯৮ সালে হাওয়াইয়ে জন্ম নেয়া ফ্রান্সিস আর্সেন্তিয়েভ তার স্বামীর সাথে এভারেস্ট জয় করেন অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়া। কিন্তু নামার সময় তারা দুজনেই মারা যান। যেহেতু তারা নিরাপদে ফিরে আসতে পারেননি তাই তাদের এভারেস্ট জয়কে গণ্য করা হচ্ছে না।
নিরাপদে ফিরতে পারাটা পর্বত জয়ের অংশ কিনা সেটা নিয়ে বহুবছর আগে থেকেই বিতর্ক চলছে। ১৯২৪ সালে জর্জ ম্যালোরি এবং অ্যান্ড্রু ইরভিন নামের দুজন পর্বতারোহী সত্যিকার অর্থেই এভারেস্ট জয় করেন কিন্তু তারা আর বেঁচে ফিরতে পারেননি। তাই তাদের এই এভারেস্ট জয়কে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। এডমুন্ড হিলারি আর তেনজিং নোরগের জয়কেই প্রথম বলে গণ্য করা হয়।
সৌভাগ্যবশত আরনট এখন নিরাপদেই আছেন এবং তাকে প্রথম আমেরিকান নারী হিসেবে বিনা অক্সিজেন সিলিন্ডারে এভারেস্ট জয় করার স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে।
১৯৭৮ সালে রেইনহোল্ড মেসনার এবং পিটার হ্যাবলার প্রথম এভারেস্ট জয় করেন অতিরিক্ত অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়া। সেসময় সবার ধারণা ছিল অক্সিজেন ছাড়া এই উচ্চতায় উঠা কোনোভাবেই সম্ভব না অথচ তারা সেটা করে দেখিয়েছেন।
নিউজিল্যান্ডের লিডিয়া ব্রাডলি প্রথম নারী যিনি এই মাইলফলক অর্জন করেন।
এখন পর্যন্ত ৪ হাজারের বেশি মানুষ এভারেস্ট জয় করেছেন কিন্তু এদের মধ্যে মাত্র ২০০ জনের মত আছেন যারা অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়া এটা পেরেছেন। আর এদের মধ্যে ৬ জন রয়েছেন নারী।
তবে আরনটের এটা প্রথম এভারেস্ট জয় নয়। এই নিয়ে মোট ৬ বার এভারেস্টের শীর্ষে উঠেছেন তিনি। নারী হিসেবে এরচেয়ে বেশিবার এভারেস্ট জয় করেছেন একমাত্র লাখপা শেরপা (৪২ বার)।
সূত্রঃ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক