দীর্ঘ ১২ বছর পর গত শনিবার থেকে আবারও চালু হয়েছে বাগদাদে অবস্থিত ইরাকের জাতীয় জাদুঘর।
ইরাকের উত্তরের শহর মসুলে অবস্থিত ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের দ্বারা মূল্যবান সব প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ ধ্বংসের সমুচিত জবাব দিতেই জাদুঘরটি পুনরায় চালু করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানায়। ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন আগ্রাসন শুরু হবার পর বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো এই জাদুঘর।
ইরাকের পর্যটন এবং প্রত্নতত্ত্ব প্রতিমন্ত্রী কায়েস হুসেইন রশিদ এএফপিকে জানান, গত মাস দুয়েক ধরেই জাদুঘরটি পুনরায় চালু করার প্রস্তুতি চলছিল। মসুলে ঘটা সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর কারণে আমাদের কাজ আর দ্রুত হয়েছে।
ইরাকের জাতীয় জাদুঘর একসময় মেসোপটেমিয়া সভ্যতার অমূল্য সব ধ্বংসাবশেষ দ্বারা সমৃদ্ধ ছিল। এর বেশিরভাগই জাদুঘর থেকে লুট হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষ জানায়, লুট হওয়া ১৫ হাজার পুরাতত্ত্ব থেকে ৪ হাজার ৩০০টি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে গত ১২ বছরে। আরও ১০ হাজার পুরাতত্ত্ব খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা চলছে।
গত বৃহস্পতিবার মসুল শহর দখল করে রাখা আইএস জঙ্গিরা একটি ভিডিও প্রকাশ করে। ভিডিওতে দেখা যায়, জঙ্গিরা হাতুড়ি এবং ড্রিল মেশিন দিয়ে প্রাচীন অনেক মূর্তি নষ্ট বা বিকৃত করে ফেলছে। এগুলোর মধ্যে কোন কোন মূর্তি ৩ হাজার বছরের পুরনো ছিল।
ভিডিওতে এক জঙ্গি দাবি করে, মূর্তিপূজা বা পৌত্তলিকতার বিরোধিতা করে তারা এসব মূর্তি ধ্বংস করে ফেলছে। কিন্তু গত শনিবার একটি সমাবেশে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদি বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে যে আইএস জঙ্গিরা কিছু প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ নষ্ট করে ফেলছে এবং বাকিগুলো চোরাচালান করার জন্য রেখে দিয়েছে’।
বিশেষজ্ঞরা জানান, যেসব প্রত্নতত্ত্ব সম্পদগুলো চোরাচালান করার জন্য আকারে বড় এবং ভারী সেগুলো তারা নষ্ট করে ফেলছে। অন্যান্যগুলো চোরাচালান করে তা দিয়ে আইএসের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা হবে বলে তারা ধারণা করছেন।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘ভিডিও দেখে তারা এ সম্পদগুলো চিহ্নিত করে রেখেছেন। এগুলো উদ্ধার করার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে অভিযান চালানো হবে’।
ইরাকের জাতীয় জাদুঘর পুনরায় চালু করার ফলে মসুলের আইএসের দ্বারা সৃষ্ট এই ক্ষত কিছুটা হলেও দূর হবে বলে রশিদ মন্তব্য করেন।