লম্বা গলাওয়ালা অতিকায় ব্রন্টোসরাস ডাইনোসর একসময় পৃথিবীর বুকে ঘুরে বেড়াত। প্রায় ১ শতক আগে বিজ্ঞানীরা এর নাম পরিবর্তন করে রাখেন অ্যাপাটোসরাস। কিন্তু এরকম লম্বা গলাওয়ালা ১ ডজন প্রজাতির ডাইনোসর পরীক্ষা করে ব্রিটিশ এবং পর্তুগীজ একদল ফসিলগবেষক জানিয়েছে, এখন সময় হয়েছে তাদের সেই পুরনো নাম ফিরিয়ে দেয়ার।
১৮৭০ সালে আমেরিকার পশ্চিমে ওথনিয়েল সি মার্শ এবং এডওয়ার্ড ডি কুপ ডাইনোসরের ফসিল খোঁজার এক প্রতিযোগিতায় নামেন, যেটাকে ‘বোন ওয়ার্স’ নামে ডাকা হতো।
মার্শ যখন খুঁড়ছিল তখন তার দল লম্বা গলাওয়ালা বিশাল দুইটি সরোপডের অসম্পূর্ণ কঙ্কাল খুঁজে পান। এই কঙ্কালের ওপর ভিত্তি করে ১৮৭৭ সালে মার্শ ঘোষণা করেন তিনি নতুন এক ধরণের ডাইনোসরের সন্ধান পেয়েছেন যেটার নাম তিনি দিয়েছিলেন অ্যাপাটোসরাস অ্যাজাক্স। এর দুই বছর পর তিনি জানান, ২য় কঙ্কালটি ব্রন্টোসরাস এক্সসেলসাস নামক আরেক প্রজাতির ডাইনোসর। ডাইনোসর দুটিকে তিনি যথাক্রমে ‘ডিসেপ্টিভ লিজার্ড’ এবং ‘নোবল থাণ্ডার লিজার্ড’ নামে অভিহিত করেন।
কিন্তু পরবর্তীতে ফসিলবিদেরা আরেকটি প্রজাতি খুঁজে পান যেটির সাথে ব্রন্টোসরাস ও অ্যাপাটোসরাস উভয়েরই প্রচুর মিল রয়েছে। তারা তখন বলেন এই দুটো ডাইনোসরের মধ্যে এতোই সাদৃশ্য যে এদেরকে আলাদা দুটি প্রজাতিতে ফেলা যায় না। তাই ১৯০৩ সাল থেকে ব্রন্টোসরাসকে অ্যাপাটোসরাস হিসাবেই ধরা হচ্ছে।
পাঁচ বছর ধরে সরোপডের ৮১ নমুনা পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখেন, ব্রন্টোসরাস ও অ্যাপাটোসরাস-এর মধ্যে প্রচুল অমিল রয়েছে। যেমন: অ্যাপাটোসরাসের ঘাড় বেশ মোটা, কিন্তু ব্রন্টোসরাসের ঘাড় অনেক লম্বা এবং উপরের দিকে মোটা।
যদিও অমিলগুলো কম এবং ছোট ছোট কিন্তু এদেরকে একই প্রজাতিতে ফেলা যায়না। এরা একই গোত্রের দুটো ভিন্ন প্রজাতি। তবে গবেষকেরা এখনই কোন সিদ্ধান্তে যেতে নারাজ। তারা বলছেন, তারা আরও শক্ত প্রমাণ হাতে নিয়েই বিষয়টা নিয়ে নামবেন।