হরতাল-অবরোধ ছাত্রছাত্রীদের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। আমার মনে হয় হরতাল অবরোধ ছাড়া আমাদের দেশে রাজনৈতিক আর কোনো আন্দোলন নেই। বিশেষ করে জ্বালাও পোড়াও তো এই লেভেলে কখনো আমরা দেখিনি।
আমরা দুটো দলের ডাকা হরতাল অবরোধ আগেও দেখেছি। কিন্তু তার প্রভাব এখনকার মতো এতটা প্রকট আকার ধারন করতে দেখিনি।
গাড়িতে পেট্রল বোমা মেরে মানুষ মেরে ফেলে আতঙ্ক তৈরি করা, সবাইকে জিম্মি করে রাখা এর কোনো সীমারেখা এখন নেই। হরতাল অবরোধের কারণে স্কুলগুলো বন্ধ রয়েছে। তারা বিভিন্ন রকম প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন এটা আমরা বুঝতে পারি।
যে পরিস্থিতি চলছে তাতে কোনো শিক্ষকই শিক্ষার্থীদের বলতে পারছেন না তোমরা স্কুলে আসো। স্কুলে আসতে যদি পথে কিছু হয় তার দায় কে নেবে?
এই সমস্যার একটা সমাধান হতে পারতো ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষাদান। মানে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া। শুধু পরীক্ষার সময় স্কুলে এসে পরীক্ষা দেবে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু দেশে তো ঐরকমভাবে ইন্টারনেট সেবাও নেই সব জায়গায়। আবার সব স্কুলেও এই পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করা সম্ভব না।
এখন স্কুল বন্ধ থাকার কারণে সিলেবাস শেষ করতে শিক্ষকদের অতিরিক্ত ক্লাস নিতে হবে।
তাতে চাপ পড়বে শিক্ষক এবং ছাত্র দুজনের উপরই। এই খেসারত তো তাদের দেওয়ার কথা না। তাদের সমস্যার খেসারত কেন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দেবে? শিক্ষার্থীরা কেনো রাজনৈতিক সমস্যার বলি হবে? আর এর ফল ভোগ করি আমরা জনগন। এর ফল ভোগ করে দেশের যারা ভবিষ্যত তরুণ প্রজন্ম।
এই সমস্যা থেকে উত্তোরণে আমরা যেটুকু করতে পারি সেটা হলো সমস্যা যারা তৈরি করেছেন তাদের অনুরোধ করতে পারি যে আপনারা আমাদের ছেলেমেয়েদের এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিন। তাদের ভবিষ্যত বিনির্মাণে বাধা হয়ে দাড়াবেন না। এর বেশি আমরা আর কীই বা চাইতে পারি তাদের কাছে?
আমার মতে রাজনীতিবিদরাই এর একটা সমাধান করতে পারতেন। দেশের এই পরিস্তিতি তো কোনোদিন কারো কাম্য হতে পারে না। দেশের ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না এমনকি এসএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত পেছাতে হলো। শিক্ষা ব্যবস্থার মতো দেশের পরিস্থিতি তো আরো খারাপ। আমার প্রশ্ন রাজনীতিবিদরা কাদের জন্য কাজ করছেন?
আমাদের জন্যই তো ওনাদের কাজ করার কথা। সমস্যা যেহেতু তাদের সুতরাং সমাধানও তাদেরই করতে হবে। আমরা জনগন হিসেবে আশা করি ওনারা যেন হরতাল অবরোধ না দেন।
ইরেশ যাকের, অভিনেতা
পরিচালক, বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক