রাজনীতিবিদদের বোধোদয় হোক

হরতাল, অবরোধ কিংবা যেকোন সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচি মানেই হলো সাধারণ মানুষদের ভোগান্তি। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষদের বিদ্বেষ আর ভুল সিদ্ধান্তের মাশুল দিতে হয় অবুঝ শিশুদেরও।

দিনের পর দিন চলতে থাকা টানা হরতাল বা অবরোধে পড়াশোনায় অবধারিতভাবেই ব্যাঘাত ঘটে । সেইসাথে আছে দুশ্চিন্তা । যেখানে জীবনের নিরাপত্তা নিয়েই শংকিত থাকতে হয় সর্বক্ষণ, সেখানে পড়াশোনার কথা বলাই বাহুল্য।

টানা হরতালে স্কুল খোলা থাকলেও বাচ্চাকে সব দিন স্কুলে নিয়ে যেতে সাহস করে উঠতে পারেন না সবাই। আমরা বড়রাই যেখানে ভয়ে থাকি সর্বক্ষণ সেখানে ছোটরা বেড়েই উঠছে এরকম ভয়ানক সব সহিংসতার খবর শুনে। ভবিষ্যতের নাগরিকদের আমরা নির্ভয়ে বেড়ে ওঠার মতো পরিবেশও দিতে পারছি না।

স্কুলে অনিয়মিত হয়ে যাওয়ায় স্কুলে আসার আগ্রহও হারিয়ে ফেলছে অনেক সময়ই। পড়াশোনায়ও অনিয়মিত হয়ে যাচ্ছে, ছাত্রস্বল্পতার কারণে পরীক্ষা বা ক্লাসটেস্টও নিয়মিত নেয়া হচ্ছে না। বাসায় বসে থেকে সারাদিন কম্পিউটার আর টিভি নিয়ে ব্যাস্ত থাকায় শৈশবের ছুটাছুটির আনন্দ থেকেও বঞ্ছিত হচ্ছে।

এই সমস্ত কিছুরই কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব আছে বাচ্চার পড়াশোনা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর। আবার কখনো যদি কোন শিশু সামনা-সামনি কোনরকম দুর্ঘটনা দেখতে পায় তাহলে তার মধ্যে মানসিক ট্রমা দেখা দিতে পারে তার পরিণতি হতে পাতে মারাত্মক ক্ষতিকর ।

আমরা শিক্ষকেরাও আসা-যাওয়ার পথে সবসময় একটা চাপা দুশ্চিন্তায় ভুগি, ছোট ছোট বাচ্চারা আর তাদের মায়েরা কতোটা ভয়ের মধ্যে থাকতে পারে ভাবলেও কষ্ট হয়। এসব দেখেও যদি রাজনীতিবিদদের বোধোদয় হয়, নিষ্পাপ শিশুদের এই কষ্ট দেখেও যদি তারা কিছুটা সচেতন হন, এটাই এখন আমাদের সবার কামনা ।

শারমীন আক্তার, শিক্ষক
ধূমকেতু স্কুল এ্যান্ড কলেজ, গাজীপুর

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন