মানুষ- সৃষ্টির সেরা জীব, তা হোক এর বুদ্ধিমত্তার জন্য, মানসিক বোধের কারণে কিংবা সৃজনশীলতার কারণে। কিছু মানুষের মত কিংবা সৃজনশীল ধারণা মিলতে পারে কিন্তু শারীরিক গঠন না। কেউ খাটো কেউ লম্বা আবার কেউ ফর্সা, কেউ শ্যামবর্ণ, কেউবা কালো।
শরীরের এই রঙ এর ভিন্নতা কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশ অথবা অন্য মহাদেশের মানুষের দিকে তাকালে বোঝা যায় যেমন পশ্চিমা অনেক দেশের মানুষের গায়ের রঙ অনেক ফর্সা। অন্যদিকে, আফ্রিকার মানুষেরা হয় কৃষ্ণবর্ণের।
আচ্ছা কি কারণে মানবদেহের রঙের ভিন্নতা দেখা যায়? বলতে পারবে?
মেলানিন নামক এক ধরণের পিগমেন্ট যার কারণে শরীরের রঙের এতো ভিন্নতা দেখা যায়।
মেলানিন প্রধারনত ২ প্রকার।
১/ ইউমেলানিন
২/ ফিউমেলানিন
ইউমেলানিন সাধারণত বাদামী কিংবা কালো বর্ণের পিগমেন্ট আর ফিউমেলানিন লাল বা হলুদ বর্ণের পিগমেন্ট। এই মেলেনিনগুলো মেলানোসাইটস নামক কোষ উৎপন্ন করে যা মানবদেহের ত্বকের বাইরের অংশে অর্থাৎ এপিডার্মিস স্তরে জমা থাকে।
আমাদের দেহে ইউমেলানিনের পরিমাণ যতো বেশী আমাদের শরীরের রঙ ততো গাঢ় হবে আর মানবদেহে ফিউমেলানিনের পরিমাণ যতো বেশী আমাদের শরীরের রঙ হালকা হবে।
যদিও বিজ্ঞানীরা বলে থাকেন যে মূলত জিনগত পার্থক্যের কারণে মানুষের শরীরে মেলানিন পিগমেন্টের ধরণ ও পরিমাণ ভিন্ন হয়। কিন্তু কিছুদিন আগে এক গবেষণায় জানা যায় যে শুধু জিনগত পার্থক্যের কারণে নয়, ভৌগলিক কারণেও মানবদেহের রঙের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।
এ কারণে এক এক দেশে মানুষের শরীরের রঙে এতো ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। এর পিছনে দায়ী আমাদের সূর্য মামা। হ্যাঁ, সূর্য মামার অতিবেগুনি রশ্মি যেখানে যত বেশি পড়ে সেখানকার মানুষের শরীরের রঙ তত গাঢ় হয় আর অতিবেগুনি রশ্মি যেখানে কম পড়ে সেখানকার লোকজনের গায়ের রঙ হালকা হয়।
এই এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করা হয় বিষুবরেখার কাছাকাছি অঞ্চলগুলোকে। বিষুবরেখার কাছাকাছি যেসব এলাকাগুলোতে অতিবেগুনি রশ্মি বেশি পড়ে সেখানকার মানুষের গায়ের রঙ গাঢ় হয়। বিষুবরেখা থেকে যেসকল অঞ্চলগুলো যতদূরে অবস্থান করবে, সেসব অঞ্চলের উপর অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব তত কমতে পরবে। একই সাথে সেসব এলাকার লোকজনের গায়ের রঙও ততই হালকা হতে থাকবে।