মানুষের শখ সীমাহীন। রঙ বেরঙের শখ, স্বপ্ন থাকে মানুষের। দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়ানো বা রোমাঞ্চকর কিছু করা এগুলো মানুষের পছন্দের তালিকায় উপরের দিকে থাকে। এমনই একটি রোমাঞ্চকর খেলা হচ্ছে Rafting বা White Water Rafting।
রাফটিং একধরণের রোমাঞ্চকর আউটডোর স্পোর্টস যা সাধারণত মানুষ অবসর সময়ে করে থাকে। খরস্রোতা নদী কিংবা স্রোতশীল পানিতে রাবারের তৈরি বিশেষ ধরনের ভেলা ভাসিয়ে রাফটিং করা হয়। এই খেলায় নদীর স্রোত যত বেশী হয় ততই রোমাঞ্চ বাড়ে তবে তার সাথে বিপদের আশঙ্কাও বাড়তে থাকে। রাবারের ভেলা বা রাফটে ৮-১০ জনের মতো মানুষ বসে দলবদ্ধভাবে এই আউটডোর স্পোর্টসের উত্তেজনা উপভোগ করতে পারে।
১৮৪০ সালের দিকে এই খেলার ব্যবহৃত রাবারের রাফট সর্বপ্রথম সূচনা করে ইউএস মিলিটারির লেফটেন্যান্ট জন ফ্রেম্যান্ট। তবে রাফটিং ৭০ দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করতে শুরু করে।
সব নদী রাফটিং এর জন্য উপযোগী নয়। একটি নদী ভ্রমণ এর জন্য কতোটা নিরাপদ তা নির্ণয়ের জন্য রাফটিং এ আন্তর্জাতিকভাবে ছয়টি ক্লাস ব্যবহার করা হয়। ক্লাস ওয়ান শ্রেণীভুক্ত নদীগুলোতে খুব সহজে সবাই রাফটিং করতে পারে। ক্লাস যতো বাড়তে থাকে, সেসব নদীতে রাফটিং করা ততই কঠিন হয়। ক্লাস ফাইভ শ্রেণীভুক্ত নদীগুলোতে রাফটিং করা অতি দুঃসাধ্য এবং ক্লাস সিক্স শ্রেণীভুক্ত নদীগুলোকে আন্তর্জাতিক ভাবে রাফটিং এর অনুপযোগী বলে বিবেচনা করা হয়।
খরস্রোতা নদীর পানিকে হোয়াইট ওয়াটার বলা হয়ে থাকে। এই হোয়াইট ওয়াটারে মানুষের রাফটিং করার ঝোঁকটা একটু বেশীই থাকে। রাফটিং দেখতে বিপদজনক খেলা মনে হলেও আশ্চর্যজনক কথা এই যে এই খেলায় আহতের সংখ্যা তুলনামুলক ভাবে অনেক কম। তবে পরিবারসহ কিংবা দলবেঁধে রাফটিং এ যাওয়ার সময় আগে রাফটিং অপারেটরের কাছ থেকে সকল উপকরণ এর ব্যবহার এবং নিরাপত্তা সম্পর্কে অবহিত থাকা জরুরী।
আধুনিক রাফটিং উপকরণের কারণে বর্তমান সময়ে এমন সব নদীতে রাফটিং করা সম্ভব হচ্ছে যা আগে প্রচণ্ড ঝুঁকির কারণে অসম্ভব বলে বিবেচনা করা হতো। এর অন্যতম উদাহারণ হলো গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের কলোরাডো নদী। বর্তমানে প্রতি বছরে শতশত ভ্রমণকারী এই নদীতে রাফটিং উপভোগ করছেন যা আগে কেউ চিন্তাও করতে পারতো না। এছাড়া, হিমালয়ের পার্শ্ববর্তী স্থানে অর্থাৎ নেপাল, ভুটান, উত্তর ভারতের পাথুরে খরস্রোতা নদীগুলোতে রাফটিং করে থাকেন হাজারো পর্যটকেরা।
হোয়াইট ওয়াটারে রাফটিং করা অন্য সব নদীতে নৌকা চালানোর মত ব্যাপার নয়। এখানে বেশ কিছু টেকনিক অবলম্বন করা হয়। এমন কিছু টেকনিক হলো – Punching, High Siding, Low Siding ইত্যাদি।