শিরোনাম দেখে অবাক হচ্ছেন? অবাকই হওয়ার কথা। কারণ আমরা ওজন ঠিক রাখতে বা কমাতে কিছু অপছন্দের খাবার খাই, আবার পছন্দের খাবারও বর্জন করে থাকি। তবে আপনি সব কিছুই খেতে পারবেন, ওজন বাড়বে না। আর এজন্য আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।
চলুন দেখে নিই কীভাবে সব কিছু খেয়েও ওজন ঠিক রাখা যায়।
ডায়েটিং বন্ধ করুন
ডায়েট আসলে কাজ করে না। কারণ এটি টেকসই নয়। কারণ পছন্দের কিছু খেতে না পারা আপনাকে অসুখী করতে পারে। তাই যা ইচ্ছা খান ও মাথা থেকে ডায়েটের ভূত তাড়ান। আপনার যদি ওজন কমানো বা ঠিক রাখার ইচ্ছা থাকে তাহলে সুস্থ থাকুন এবং খাবার না পাল্টিয়ে বরং জীবনযাত্রায় স্থায়ীভাবে পরিবর্তন আনুন।
ক্ষুধার্থ হলেই খাবেন
আপনাকে একটি অ্যাপ ব্যবহার করতে বলা হলো, যেটি আপনার খাবার খাওয়ার সময় হয়েছে এমনটি বলে দেবে। হয়তোবা সেই অ্যাপ আনন্দে ব্যবহার করতে চাইবেন। কিন্তু এই অ্যাপটি আপনার শরীরেই আছে, আর তা হলো ক্ষুধা। ক্ষুধা হলো সেটিই যা আপনাকে খাওয়ার জন্য তাগাদা দেয়। তাই ক্ষুধা লাগলে বেশিক্ষণ অপেক্ষা না করে তখনই খেয়ে নিন। বেশি ক্ষুধার্থ হলে আপনার অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে।
খাবারের পরিমাণ কমান
যা খেতে চান তাই খাবেন কিন্তু খাবারের পরিমাণ কমিয়ে ফেলুন। ধরুন আপনি এক প্লেট খাবার খান, সেটিকে দুইভাগে ভাগ করুন। একভাগ খাবেন। যদি ২০ মিনিট পরে আবার ক্ষুধা লাগে তাহলে বাকি একভাগ খাবেন। দেখবেন প্রথম একভাগ খাবারেই আপনি অভ্যস্ত হয়ে গেছেন এবং সুস্থ থাকবেন।
অতিরিক্ত খাবার নয়
অনেকেই পছন্দের খাবার পেলে প্যান্ট ঢিলা করে খেতে বসে যান! এটি মোটেও ঠিক নয়। যখনই বুঝবেন আপনার ক্ষুধা নিবারণ হয়েছে তখনই খাওয়া বন্ধ করুন। অতিরিক্ত খাবার যেমন আপনাকে অস্বস্তি দেয়, তেমনই আপনার শরীরেরও ক্ষতি করে থাকে।
খাবারের লেভেল বাদ দিন
সুপার ফুড, যথাযথ প্রোটিন, ক্যালরিবিহীন কিংবা জাঙ্ক ফুড, এভাবে বিভিন্ন খাবারের লেভেল তৈরি করা বাদ দিন। বাইনারি টার্মস বাদ দিয়ে যা ইচ্ছা খান, আপনাকে ভাবতে হবে না কোনটি ভালো এবং কোনটি খারাপ। উদাহরণটি খারাপ শোনালেও বাস্তব একটি উদাহরণ দেই। কথায় আছে, ছাগলে কীনা খায়? ছাগল যতোক্ষণ ক্ষুধার্থ থাকে যা পায় তাই খায়। ভেবে দেখে না কোনটি ভালো, কোনটি খারাপ। আপনি কী কখনও ‘মোটা ছাগল’ দেখেছেন? তেমনই আপনার খাবার খাওয়ার সময়ও লেভেল নিয়ে চিন্তার কারণ নেই।
খাওয়াকে আনন্দময় করুন
খাওয়ার মুহুর্তকে আনন্দময় করে তুলুন। অন্য কিছুতে মনোযোগ রয়েছে এমন সময় খাবার খাবেন না। তাই প্রস্তুতি নিয়ে খাবার টেবিলে বসুন, পরিমানের চেয়ে মানের যথার্থতার গুরুত্ব দিন, স্বাদ গ্রহণ করুন। তাহলে আপনার খাবারে বিরক্তি লাগবে না।
আপনার অনুভূতিকে খেয়ে ফেলবেন না
মনে করা হয়, খাবার আমাদেরকে সুখি করে। আর এজন্য আমাদেরকে স্বাদ বোঝার ইন্দ্রিয় রয়েছে। অনেকেই মন খারাপ থাকলে ভালো বা পছন্দের খাবার খান। তবে মনে রাখতে হবে আমাদের সুখি হওয়ার বা ভালো বোধ করার একমাত্র উৎস খাওয়া নয়। তাই মন খারাপসহ বিভিন্ন কারণে খাবার খাওয়া একেবারেই জরুরী না হলে অন্যকিছুর মাধ্যমে আনন্দ উপভোগ করুন। জনপ্রিয় টেলিভিশন শো দেখুন, মুভি দেখুন, গান শুনুন কিংবা প্রিয়জনদের সাথে ভালো সময় কাটান।
আপনার শরীরকে শ্রদ্ধা করুন
কেমনটা শোনাচ্ছে তাই না? ঠিকই বলছি। যখন খাবার খান তখন শরীর কীভাবে এটিকে গ্রহণ করে এবং কী পরিবর্তন আসে সেটি আমলে নিন। সেই অনুযায়ী খাবার খান। শরীর চায় না এমন খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
ব্যায়াম করুন
প্রতিদিনের রুটিনে নিয়মিত ব্যায়াম আপনাকে সুস্থ্য ও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে। মনে রাখবেন, ক্যালরি ঝরানোর উদ্দেশ্যে নয়, সুস্বাস্থ্য ও শক্তির জন্যই ব্যায়াম করুন। এছাড়া ব্যায়াম খারাপ খাবার খাওয়ার ক্ষুধা জোগাতেও নয়!
খাবার থেকে শিক্ষা নিন
যখন আপনি খাবার খান তখন আপনার কী অনুভূতি হয় এবং সত্যিকারঅর্থে খাবারের স্বাদ কেমন লাগে তা বোঝার চেষ্টা করুন। বুঝতে পারবেন কিছু খাবার অন্য খাবারের তুলনায় আপনার কাছে বেশি ভালো লাগে। তা কোন খাবারটি খেলে আপনার কেমন লাগে সেটি লিপিবদ্ধ করুন ও সেই অনুযায়ী খান। এর মাধ্যমে আপনার খাবার খাওয়ার পুরাতন অভ্যাসও পাল্টে যেতে পারে। শরীর ও মন যেটাতে সায় দেয় বুঝবেন সেটাই আপনার জন্য উপকারী।