আনন্দ, দু:খ, হতাশা কিংবা এ ধরণের যেকোন অনুভূতি প্রত্যেক মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে। আর খারাপ অনুভূতিগুলো যদি অতিমাত্রায় হয়ে থাকে তাহলে তার প্রভাব অনেক ভয়াবহ হতে পারে। বড়রা অনেক ক্ষেত্রে বিষয়গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও ছোটদের ক্ষেত্রে সেটি সহজ নয়। ফলে ছোটবেলার খারাপ অনুভূতিগুলো তাদের চিন্তা, আচরণ, জীবনযাত্রায় জেঁকে বসে।
শিশুর আচরণগত সমস্যা প্রতিরোধ বা দূরীকরণে অভিভাবকদের বড় ভূমিকা পালন করতে হয়। এক্ষেত্রে পরিবার, শিক্ষকদেরও এগিয়ে আসতে হয়। এ ধরণের সমস্যা মোকাবেলায় অভিভাবক, পরিবার ও শিক্ষকদের যে কৌশলগুলো অবলম্বন করা উচিত তা নিচে উল্লেখ করা হলো:
শিশুর চাহিদা ও প্রশ্নে গুরুত্ব দেয়া
শিশুর বিভিন্ন চাহিদা মেটানো ও তারা যেসব প্রশ্ন করে সেদিকে গুরুত্ব দিলে তারা নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ মনে করবে। একইসাথে তারা আপনার উত্তর বা সমাধানকে ইতিবাচক হিসেবে দেখবে।
জীবনের ইতিবাচক দিকনির্দেশনা
আপনার শিশুকে জীবনে ইতিবাচক দিকনির্দেশনাগুলো দিন, যাতে তারা ধাপে ধাপে আরও স্বাধীন ও আত্বনির্ভরশীল হয়ে বেড়ে উঠতে পারে।
শিশুর প্রতি আপনার ভালোবাসা ও সহায়তা নিশ্চিত করুন
প্রতিদিন অথবা প্রায়ই আপনার শিশুকে ‘আই লাভ ইউ’ কথাটি বলুন। এরফলে তাদের মনে কোনো দু:খ, হতাশা থাকলে কেটে যাবে। এমনকি আপনি যদি পাশে নাও থাকেন তাহলেও তারা ভালো অনুভব করবে। আপনার ভালোবাসা ও সহায়তা তাদেরকে আরও আত্ববিশ্বাস যোগাবে।
শিশুদের কথা শুনুন
শিশুদের প্রতিদিনের কার্যক্রম সম্পর্কে, বিভিন্ন বিষয়ে তারা কী অনুভব করে সেটি জিজ্ঞাসা করুন। অনুভূতি ভালো হলে আরও প্রেরণা দিন, খারাপ হলে সেটি উত্তরণের উপায় বলে দিন কিংবা এ বিষয়ে সহায়তা করুন। তাদের প্রতি আপনার মনোযোগে তারা নিরাপদ বোধ করবে ও মনে করবে বড়দের কাছে তারা গুরুত্বপূর্ণ।
শিশুর আগ্রহের বিষয়ে সহায়তা
শিশুদের আগ্রহ, শখ, পক্ষপাতিত্ব ইত্যাদি বিষয়ে সহায়তা ও উন্নতকরণে কাজ করলে তারা মনে করবে যে আপনি তার সিদ্ধান্ত ও পছন্দের ক্ষেত্রে কতোটা সহায়ক।
সময় দিন
শিশুকে যথেষ্ট সময় দিন। আপনি খুব ব্যস্ত থাকলে প্রতিদিন শিশুর জন্য একটি ভালো সময় বরাদ্দ করুন। এতে তার দিন বা জীবন কেমন যাচ্ছে সেটি সম্পর্কে আপডেটেড থাকতে পারবেন। এছাড়া তার সাথে আপনার বন্ধন আরও দৃড় হবে।
দৃষ্টি রাখুন
আপনি যদি খেয়াল করেন আপনার শিশুর আচরণ-ব্যবহারে পরিবর্তন আসেছ বা আগে যা যা করতে সে পছন্দ করতো সেটি করছে না তাহলে দেরি করবেন না। এখনই তাকে জিজ্ঞাসা করুন কী হয়েছে। তারা কীসে বিরক্ত হচ্ছে বা তাদের আচার-ব্যবহারে পরিবর্তনের কারণ কী সেটি জানতে পারবেন। এরপর সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিন।
আদর্শ হোন
আপনি শিশুর কাছে আপনি আদর্শ হয়ে উঠুন। বিভিন্ন সমস্যা বা পরিস্থিতি আপনি কীভাবে মোকাবেলা করেন সেটি দেখে শিশুরা শিক্ষা নেয়। তারাও এগুলো তাদের জীবনের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে থাকে। আপনি যদি কারণে-অকারণে কাউকে বকাঝকা দেন বা বড়দের প্রতি সম্মান ও ছোটদের প্রতি স্নেহ না দেখান তাহলে শিশুরাও সেটি করবে।