অনলাইনে পরিবারকে নিরাপদ রাখার ১০ উপায়

অনলাইনে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখতে চান ঠিক সেভাবেই নিজের পরিবারকেও নিরাপদ রাখা উচিত। এক্ষেত্রে করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে নিজেদের মধ্যে খোলাখুলি আলোচনা করতে হবে। নিজের ডিভাইস ও অনলাইনে কী করা উচিত ও কী করা উচিত নয় সেটি সবাইকে জানাতে হবে।

চলুন জেনে নিই অনলাইনে নিজের পরিবারকে নিরাপদ রাখতে করণীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে। যা নিজে মেনে চলবেন ও পরিবারের সকল সদস্যকে মেনে চলতে বলবেন।

১. ছবিতে ওয়াটারমার্ক ব্যবহার করুন। এমনভাবে ওয়াটারমার্ক বসাবেন যাতে সেগুলো মুছে ফেলা কঠিন হয়। এতে ছবি অনেকটা নিরাপদ হয়। যদি কেউ আপনার ছবি চুরি করতে চায়, তাহলে এই ওয়াটারমার্ক মুছে ফেলে ছবিটা ব্যবহার করা তার জন্য কঠিন হবে। আপনার অনুমতি ছাড়াই যদি ঐসব ছবি ব্যবহার করে তাহলে ওয়াটারমার্কের মাধ্যমে আপনি সহজেই প্রমাণ করতে পারবেন যে এগুলো আপনার ছবি।

২. আপনার শিশুর মোবাইল ফোনের পূর্ণ অ্যাক্সেস রাখুন। প্রায়ই মোবাইলটি দেখুন যে তারা মোবাইল ও ইন্টারনেটে কী করছে। ব্যক্তিগত তথ্য যেখানে সেখানে দিলে কী ধরণের ক্ষতি হতে পারে সে সম্পর্কে তাদেরকে ভালোভাবে বর্ণনা করুন।

৩. বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না। যদি আপনার ডিভাইস চুরি হয়ে যায় তাহলে অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর যদি সবক্ষেত্রে আপনি একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন তাহলে তাদের পক্ষে এগুলো হ্যাক করা সহজ হয়ে যাবে। ভিন্ন ভিন্ন অ্যাকাউন্টে ভিন্ন ভিন্ন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করলে একটি কেউ জেনে গেলেও অন্যগুলো নিরাপদ থাকবে।

৪. অপরিচিত ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহারে বিরত থাকুন। আপনি যদি অনিরাপদ ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে যুক্ত হন তাহলে আপনি কী করছেন সেটি অন্য কেউ জেনে ফেলতে পারে। এমনকি আপনি কোন ইমেইল ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করছেন সেটিও জেনে ফেলতে পারে। তাই যদি কোনো রেস্টুরেন্ট অথবা কফি শপে বসে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের অবস্থা দেখতে চান তাহলে সেখানকার ওয়াইফাই ব্যবহার না করে নিজের মোবাইল ডাটা ব্যবহার করুন অথবা বাড়িতে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

৫. সবসময় ডিভাইস লক করে রাখুন। এতে আপনার ডিভাইস চুরি হয়ে গেলেও ব্যক্তিগত তথ্য চুরি কিছুটা কঠিন হবে। ডিভাইসে রিমোট লক সিস্টেম ব্যবহার করুন, যাতে ডিভাইসটি চুরি হয়ে গেলে সেটি অকার্যকর করে ফেলতে পারেন।

৬. নিজের ব্যক্তিগত তথ্য অপরিচিত কাউকে জানাবেন না। নিজের বাসার পূর্ণ ঠিকানা, ব্যাংকের সাথে যুক্ত ইমেইল, মোবাইল নাম্বার, পাসপোর্টসহ বিভিন্ন পরিচয় পত্রের নাম্বার, ব্যাংকের তথ্য ইত্যাদি অপরিচিত কেউ জেনে ফেললে আপনার ক্ষতি করতে পারে।

৭. অনলাইনের বন্ধুত্ব অনলাইনেই রাখুন। পর্দার পিছনে সহজেই মিথ্যা বলা যায়। তাই আপনার অনলাইন বন্ধু যে আপনার সত্যিই বন্ধু হতে পারে এমনটি ভাবা ঠিক নয়। একেবারেই যদি দেখা করার প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই ভালোভাবে জেনেশুনে এবং নিরাপদ জায়গায় দেখা করবেন যাতে সে চাইলেও কোনো ক্ষতি করতে না পারে।

৮. যে ওয়েবসাইট ও অ্যাপস ব্যবহার করছেন তার ‘সেইফটি ফিচার’ সঠিকভাবে ব্যবহার করুন। কিছু অ্যাপস এবং ওয়েবসাইটে সিকিউরিটি সেটিং ও লক থাকে যার মাধ্যমে কে কে আপনার তথ্য দেখতে পাবে সেটি সীমাবদ্ধ করতে পারবেন। এ ধরণের নিরাপত্তা সেটিংস এর সুবিধা নিন।

৯. অনলাইনে কী পোস্ট করতে যাচ্ছেন সেটি সম্পর্কে আগেভাগেই চিন্তা করে নিন। এমন কিছু পোস্ট করবেন না যা সরাসরি কাউকে বলতে পারবেন না। ধরুন আপনার পরিবারের সবাই মিলে বেড়াতে যাচ্ছেন, এ সম্পর্কে যদি অনলাইনে পোস্ট করেন তাহলে চোর কিংবা দুষ্কৃতকারীরা আপনার বাসায় এসে চুরি বা ক্ষতি করতে পারে। এছাড়া যেখানে বেড়াতে যাচ্ছেন সেখানেও চাইলে কেউ আপনার ক্ষতি করতে পারে। তাই বেড়ানো শেষে বাসায় ফিরে ভ্রমণের ছবি বা রিভিউ দিতে পারেন।

১০. কিছু লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করে অন্যদের ক্ষতি করার জন্য। তাই কেউ আপনার ক্ষতি করুক সেই সুযোগ দিবেন না। যদি দেখেন কেউ আপনার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে বা ক্ষতি করেছে তাহলে ঘাবড়ে না গিয়ে প্রথমে পরিবারের সাথে বিষয়টি খোলাখুলিভাবে আলাপ করুন। প্রয়োজনে আইন-প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা নিন। নিজে যেমন অন্যের বুলিং হতে চান না, তেমনই অন্য কাউকে বুলিং করবেন না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন