আগামীকাল (৩০ মে) থেকে রাশিয়ায় শুরু হচ্ছে ‘স্টার্টআপ ভিলেজ’। চলবে জুনের ১ তারিখ পর্যন্ত। রাশিয়া ও সিআইএস অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আয়োজিত সবচেয়ে বড় মেলায় অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশি রোবট।
‘স্টার্টআপ ভিলেজ’ প্রতিবছর রাশিয়ার স্কলকোভো শহরে আয়োজিত হয়। এ মেলায় অংশ নিতে সারা পৃথিবী থেকে আসে নামিদামি সব স্টার্ট আপ কম্পানি, আন্তর্জাতিক আইটি ও ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠান। দুই দিনব্যাপী চলা এ মেলা আয়জন করে থাকে রাশিয়ার স্কলকোভো ফাউন্ডেশন।
এবারের মেলায় প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণকারী বাংলদেশ রোবটিক্স ফাউন্ডেশন প্রদর্শন করতে যাচ্ছে পাইপ ইন্সপেকশন রোবট। পাইপ ইন্সপেকশন রোবট এর কাজ হচ্ছে গ্যাস অথবা পানির পাইপ এর ব্লক বা ফাটল নির্ণয় করা ও পাইপলাইন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সকল তথ্য আহরণ করা।
কিছুদিন আগে এই রোবটটি উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম এনডিসি। এ প্রসঙ্গে হোসনে আরা বেগম বলেন, আমাদের তরুণরা অনেক ভালো ভালো কাজ করছে, কিন্তু পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার অভাবে তারা এগিয়ে যেতে পারছে না। এ কারণে তারা হতাশ হয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। কিন্তু এতোকিছুর পরেও কিছু তরুণ দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
রোবটিক্স ফাউন্ডেশনের টিম লিডার তানভির তাবাসসুম অভি এর মতে, পাইপ ইন্সপেকশন রোবট ব্যাবহারের মাধ্যমে যেমন কমবে জীবনের ঝুঁকি তেমনি প্রতি বছর ঢাকা শহরের বন্যা ও অধিক বৃষ্টিপাতের ফলে জনজীবনে যে দুর্বিষহ প্রভাব পড়ে তা থেকেও পরিত্রান পাওয়া যাবে।
এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শহরতলির পাইপলাইনে কোনও ধরনের সমস্যা বা ব্লক আছে কিনা তা আগাম জানা যাবে। এতে করে ঢাকা ওয়াসা ও ডিএনসিসি আগাম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সারিয়ে তুলতে পারবে ত্রুটিযুক্ত পাইপ। এর ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বাঁচবে সময়, সাশ্রয় হবে এ খাতে ব্যয় করা বিপুল পরিমাণ অর্থ, কমবে ঘনঘন রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির প্রবণতা ও জনদুর্ভোগ।
জার্মানীতে উচ্চতর শিক্ষা নেওয়া তানভির তাবাসসুম আরও বলেন, উন্নত বিশ্বে এই প্রযুক্তির ব্যবহার নতুন নয়। ইনহাউস প্রোডাকশন হওয়ায় এখন এটি ব্যয়সীমার মধ্যে।
রোবটটির ডিজাইনার ও বাংলাদেশ রোবটিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা হাফিজুল ইমরান বলেন, শুধু একের পর এক প্রোডাক্ট ডেভেলপ করে গেলেই হবে না। আমাদের দরকার এর বাস্তবায়ন। বাস্তবায়ন ছাড়া আমরা নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারব না। দেশের অনেক প্রযুক্তিবিদ এখন অনেক ভালো প্রোডাক্ট ডেভেলপ করেছেন কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থ সংকুলান করতে না পারায় থেমে যাচ্ছে সেসব উৎপাদন।
হাফিজুল ইমরান আশা প্রকাশ করেন, সরকার পাইলট প্রোজেক্ট হিসেবে এই প্রোডাক্টটি ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করবে। এতে করে যেমন দেশের জরুরি সমস্যাগুলোর সমাধান হবে তেমনি এই পণ্য বিদেশে রফতানি করে বাড়বে দেশের আয়।