পরিবেশ বাঁচাতে সারা পৃথিবী জুড়েই এখন সবুজ আন্দোলনের হাওয়া৷ প্রযুক্তি থেকে ফ্যাশন সর্বত্রই চেষ্টা চলছে ইকো -ফ্রেন্ডলি পরিবেশ তৈরি করার৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই বাড়ি তৈরি বা অন্দর সজ্জার সময় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে গ্রিন ডিজাইনের উপর। অর্থাৎ বাড়ি তৈরির সময় বা বাড়ি সাজানোর সময় যতটা সম্ভব পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে৷
পরিসংখ্যান বলছে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতে প্রায় ৮০ শতাংশ বাড়িই ইকো-ফ্রেন্ডলি আর্কিটেকচার ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে৷ ইকো-ফ্রেন্ডলি সামগ্রী দিয়ে বাড়ি তৈরি করলে বা ঘর সাজালে যে খরচ বেশি পড়বে তা একেবারেই নয়৷
আর শুধু ঘর সাজানো বা বাড়ি তৈরির সামগ্রী নয়, বাড়ির ডিজাইনও এমন হবে যাতে প্রাকৃতিক শক্তিকে যতটা পরিমাণে কাজে লাগানো যায়৷ তাই আপনিও যদি আপনার বাড়ি তৈরির সময় গ্রিন ডিজাইন অনুসরণ করতে চান, তাহলে কয়েকটা কথা মাথায় রাখতেই হবে।
বাড়ি তৈরির সময় যেসব সামগ্রী লাগে, তার মধ্যে সিমেন্ট অন্যতম৷ অথচ এই সিমেন্ট তৈরির কারখানাগুলো থেকে সিমেন্ট তৈরি করার সময় যে পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড, ধুলো নির্গত হয়, তা পরিবেশ দূষণের ক্ষেত্রে অনেকটাই দায়ী৷ তাই চেষ্টা করুন সিমেন্টের বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করার৷ অথবা যতটা পরিমাণে কম সিমেন্ট ব্যবহার করার৷ সিমেন্টের পরিবর্তে স্যান্ডব্যাগ ব্যবহার করা যায়৷ অথবা খুব ভালো গুণমানের ইঁট ব্যবহার করা যেতে পারে৷ এমন ইঁট ব্যবহার করুন যা, সহজেই ভেঙে না যায়৷ ভালো ইঁট ব্যবহার করলে কিন্তু দেওয়ালে প্লাস্টার করার দরকার পড়বে না৷ দরকার হলে বাড়ি তৈরির সময় একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন৷
বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব চেষ্টা করুন স্থানীয় উপাদান ব্যবহার করার৷ একটা সময় ছিল, যখন ঘর রঙ করার সময় লাইম ওয়াশ করা হতো৷ এখন ঘর রঙ করার সময় তা হয় না বললেই চলে৷ বাজারে চলতি পেইন্টের চেয়ে কিন্তু লাইম ওয়াশ অনেক ইকো-ফ্রেন্ডলি৷ তাছাড়া ব্যবহার করুন স্যান্ড স্টোন বা স্লেটের মতো উপাদান৷ এগুলো বাজারেও খুব সহজেই পাওয়া যায়৷
ঘর সাজানোর ক্ষেত্রেও পরিবেশবান্ধব উপাদান ব্যবহার করুন৷ অন্দর সজ্জায় খুব সহজেই রিসাইকেল করা উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে৷ যেমন পুরনো আসবাব ফেলে না দিয়ে নতুন করে বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে৷ বা আলাদা করে পর্দার কাপড় না কিনে, পুরনো শাড়ি সুন্দর করে সেলাই করে পর্দা বানিয়ে নিতে পারেন অনায়াসে৷
বাড়ি তৈরির সময় খেয়াল রাখুন, ঘরে যেন কমপক্ষে দুটি জানালা থাকে৷ তার ফলে আলো-বাতাস সহজেই ঢুকতে পারবে৷ যদি ফ্ল্যাট কেনেন, আলাদা করে কন্সট্রাকশন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে রাখুন৷ সুবিধা হবে৷
বৃষ্টির পানি ধরে রাখার চেষ্টা করুন৷ তার জন্য আলাদা পাইপের ব্যবস্থা করুন, যাতে সহজেই তা করা যায়৷ বাড়িতে সোলার এনার্জি প্যানেল বসানোর কথা ভাবুন৷ একদিনে সব করে উঠতে পারবেন না৷ সময় নিয়ে করুন৷
সূত্র : এই সময়