যুদ্ধ বিগ্রহ আমরা কেউই পছন্দ করি না। তবুও রাষ্ট্রের সুরক্ষায় সবার আগে প্রয়োজন দক্ষ সামরিক বাহিনী। সেই সাথে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর দ্বারা বিশ্বে কর্তৃত্ব করাও সম্ভব। দেশকে বহিঃশক্তির হুমকি থেকে নিরাপদ রাখে সামরিক বাহিনী, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও এরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অ্যাকশানধর্মী সিনেমা আর চ্যালেঞ্জিং পেশার কারণে সাধারণ মানুষের সীমাহীন আগ্রহ রয়েছে বিভিন্ন দেশের সামরিক বাহিনী নিয়ে। পাঠকদের কৌতুহল মেটাতেই পৃথিবীর সবচেয়ে সামরিক শক্তিশালী ১০টি দেশের তালিকা নিচে দেয়া হল :
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
তালিকার শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে ৯টি দেশ এক সঙ্গে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে তাদের সামরিক বাহিনীর পেছনে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাই তার চাইতে বেশি অর্থ ব্যয় করে। প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্র তার সামরিক বাহিনীর পেছনে ৫৭৭ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে। যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ লাখ সেনা রয়েছে, ১৩ হাজার ৯০০ মিলিটারি এয়ারক্রাফট রয়েছে আর ৮ হাজার ৮৫০টি ট্যাঙ্ক রয়েছে। পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী নৌবাহিনীও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। এদের রয়েছে ২০টি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার।
রাশিয়া
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া। রাশিয়া বছরে প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলার খরচ করে সামরিক খাতে। ৭ লাখ ৬৬ হাজার সৈন্য, ৩ হাজার ৫০০ মিলিটারি এয়ারক্রাফট আর ১৫ হাজার ৩৯৮টি ট্যাঙ্ক নিয়ে এদের রাশিয়ার সামরিক বাহিনী গঠিত। ট্যাঙ্কের দিক থেকে রাশিয়া খুবই শক্তিশালী। যুক্তরাষ্ট্রের পর এদের নৌবাহিনীও শক্তির দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে।
চীন
চীন বছরে ১৪৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করে সামরিক বাহিনীর পেছনে। এদের সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা ২৩ লাখ। চীনের সামরিক বাহিনীতে ট্যাঙ্ক রয়েছে ৯ হাজার ১৫০টি (দ্বিতীয় সর্বোচ্চ) এবং মিলিটারি এয়ারক্রাফট রয়েছে ২ হাজার ৮৬০টি।
ভারত
সামরিক বাহিনীর সদস্য সংখ্যার দিক থেকে ভারত পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম। সদস্য সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ। বছরে ৩৮ বিলিয়ন ডলার খরচ করে ভারত তাদের সামরিক খাতে। যদিও ভারতের নৌবাহিনী তুলনামূলক দুর্বল। তবে মিলিটারি এয়ারক্রাফট এবং ট্যাঙ্কের দিক থেকে বিশ্বে এদের অবস্থান চতুর্থ।
ব্রিটেন
শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে স্বল্প সংখ্যক সামরিক সদস্য রয়েছে ব্রিটেনের। মাত্র ১ লাখ ৪৭ হাজার। তবে শক্তিশালী নৌবাহিনী ব্রিটেনের সামরিক বাহিনীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। বছরে ৫২ বিলিয়ন ডলার খরচ করে ব্রিটেন তার সামরিক বাহিনীর জন্য। দেশটির সামরিক বাহিনীর মিলিটারি এয়ারক্রাফট সংখ্যা ৯৩৬ এবং ট্যাঙ্ক সংখ্যা মাত্র ৪০৭।
ফ্রান্স
তালিকার ৬ নম্বরে রয়েছে ফ্রান্স যাদের সৈন্যসংখ্যা ২ লাখ। প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার বাৎসরিক খরচ করে ফ্রান্স তাদের সামরিক বাহিনীর পেছনে। এদের ৬ষ্ঠ শক্তিশালী নৌবাহিনী এবং ১ হাজার ২৬৪টি এয়ারক্রাফটসহ পৃথিবীর সপ্তম বৃহৎ মিলিটারি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার রয়েছে। ট্যাঙ্ক রয়েছে ৪২৩টি। তবে ফ্রান্স বিশ্বের বৃহত্তম মিলিটারি হার্ডওয়্যার রপ্তানিকারক, যার কারণে তারা শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়া
৬ লাখ ২৪ হাজার সৈন্য নিয়ে পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম সামরিক বাহিনীর দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থান ৭ নম্বরে রয়েছে। ৩৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে এরা সামরিক খাতে। ছোট নৌবাহিনী হলেও ১ হাজার ৪১২টি মিলিটারি এয়ারক্রাফট আর ২ হাজার ৩৮১টি ট্যাঙ্ক রয়েছে।
জার্মানি
নবম বৃহত্তম সামরিক বাহিনী জার্মানির। যার সংখ্যা ১ লাখ ৭৯ হাজার। তবে শক্তির তালিকায় তাদের স্থান অষ্টম। বছরে সামরিক খাতে জার্মানি খরচ করে ৪০ বিলিয়ন ডলার। ৬৬৩টি মিলিটারি এয়ারক্রাফট আর ৪০৮টি ট্যাঙ্ক দিয়ে সমৃদ্ধ দেশটির সামরিক বাহিনী।
জাপান
তালিকার নয় নম্বরে থাকা জাপানের সৈন্যবাহিনী রয়েছে ২ লাখ ৪৭ হাজার। বছরে ৪২ বিলিয়ন ডলার খরচ করে সামরিক খাতে। পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম নৌবাহিনী রয়েছে জাপানের। এছাড়াও রয়েছে ১ হাজার ৬১৩টি এয়ারক্রাফট আর ৬৭৮টি ট্যাঙ্ক।
তুরস্ক
শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে সবার শেষে রয়েছে তুরস্ক। এদের সৈন্যসংখ্যা ৪ লাখ ১১ হাজার। তবে এই তালিকায় সবচেয়ে কম সামরিক খরচ করে তুরস্ক। মাত্র ১৮ বিলিয়ন ডলার। ১০ম বৃহত্তম নৌবাহিনী আর ১ হাজার ২০টি মিলিটারি এয়ারক্রাফট রয়েছে তুরস্কের।
নবম বৃহত্তম সামরিক বাহিনী জার্মানির। যার সংখ্যা ১ লাখ ৭৯ হাজার। তবে শক্তির তালিকায় তাদের স্থান অষ্টম। বছরে সামরিক খাতে জার্মানি খরচ করে ৪০ বিলিয়ন ডলার। ৬৬৩টি মিলিটারি এয়ারক্রাফট আর ৪০৮টি ট্যাঙ্ক দিয়ে সমৃদ্ধ দেশটির সামরিক বাহিনী।
জাপান
তালিকার নয় নম্বরে থাকা জাপানের সৈন্যবাহিনী রয়েছে ২ লাখ ৪৭ হাজার। বছরে ৪২ বিলিয়ন ডলার খরচ করে সামরিক খাতে। পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম নৌবাহিনী রয়েছে জাপানের। এছাড়াও রয়েছে ১ হাজার ৬১৩টি এয়ারক্রাফট আর ৬৭৮টি ট্যাঙ্ক।
তুরস্ক
শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে সবার শেষে রয়েছে তুরস্ক। এদের সৈন্যসংখ্যা ৪ লাখ ১১ হাজার। তবে এই তালিকায় সবচেয়ে কম সামরিক খরচ করে তুরস্ক। মাত্র ১৮ বিলিয়ন ডলার। ১০ম বৃহত্তম নৌবাহিনী আর ১ হাজার ২০টি মিলিটারি এয়ারক্রাফট রয়েছে তুরস্কের।