শিরোনামটি চমকে ওঠার মতো হলেও, কথাটি কিন্তু সত্যি। বছরে দুইবার চাঁদ সূর্যকে অতিক্রম করে যাকে আমরা সূর্যগ্রহণ বলে থাকি। এ সময় একই সরলরেখায় চাঁদ, সূর্য ও পৃথিবী থাকে না বলে আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যায়। তবে এই তিনটি যদি একই সরলরেখায় থাকে তবে আমরা পূর্ণ সূর্যগ্রহণই দেখতে পাই।
সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর কক্ষপথ এবং পৃথিবীর চারিদিকে চাঁদের কক্ষপথ কোনটাই পুরোপুরি বৃত্তাকার নয়। একারণে মাঝে মাঝে সূর্যের চেয়ে চাঁদকে বড় মনে হয় আর এর পুরো ছায়া এসে পৃথিবীতে পড়ে। আবার অন্য সময় সূর্যকে চাঁদের চেয়ে বড় দেখা যায় বলে চাঁদ সূর্যকে পুরোপুরি ঢাকতে পারে না।
চাঁদ যখন সৃষ্টি হয়েছিল তখন তা পৃথিবীর আরও কাছে ছিল। তাই পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতো বেশি। কিন্তু মহাবিশ্বের সবকিছু পরস্পরের কাছ থেকে ক্রমাগত দূরে সরে যাচ্ছে। ৪ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে এক দিন পূর্ণ হতো মাত্র ৬ থেকে ৮ ঘণ্টায়।
প্রতিদিন নিজ কক্ষপথে একবার করে আবর্তন করতে পৃথিবীর যে সময় লাগে তা প্রতিবছর ১৪ মাইক্রোসেকেন্ড করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে প্রতি দেড় বছর পরপর একটি করে ‘লিপ সেকেন্ড’ যোগ করতে হয়। ৪ মিলিয়ন বছর পর আমাদের আর কোন লিপ ইয়ার থাকবে না, ঠিক ৩৬৫ দিনেই বছর হবে।
বর্তমানে পূর্ণ এবং আংশিক সূর্যগ্রহণ হয় অর্ধেক-অর্ধেক পরিমাণে। কিন্তু ৬৫০ মিলিয়ন বছর পর সম্ভবত সর্বশেষ পূর্ণ সূর্যগ্রহণটি দেখা যাবে পৃথিবী থেকে। কেননা চাঁদ ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে পৃথিবী থেকে দূরে। তাই একসময় চাঁদের পক্ষে আর পৃথিবীর উপর পুরোপুরি ছায়া ফেলা সম্ভব হবে না। সে সময় যদি কেউ পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখতে চায় তাহলে তাকে পৃথিবী ছেড়ে মহাকাশে এমন এক জায়গায় যেতে হবে যেখানে চাঁদের পুরোপুরি ছায়া পড়বে।
এভাবেই মহাবিশ্বের অনেক নিয়মই প্রাকৃতিকভাবেই পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। একসময় পৃথিবী থেকে আর পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে না। ব্যাপারটি মেনে নেয়া ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই।