ডাগআউট

ক্রিকেট খেলার তীর্থভূমি বলা হয় লর্ডস ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে। এই স্টেডিয়ামের কথা শুনলে ছাদখোলা বারান্দায় সৌরভ গাঙ্গুলির সেই খালি গায়ের নাচের কথা মনে পড়ে সবার। এই স্টেডিয়ামে খেলা চলার সময় মাঠ পেরিয়ে সিঁড়ি বেয়ে বিশাল হলরুমের হ্যাট-স্যুট পরা ভদ্রলোকদের মাঝ দিয়ে হেঁটে ড্রেসিংরুমে যেতে হয় খেলোয়াড়দের। কিন্তু সবকিছু যখন ছোটো হয়ে আসছে, তখন মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমের দূরত্ব কেনো নয়?

আইসিসির ধারাবিধি ৪২.১০ অনুযায়ী ক্রিকেটের নতুন সংযোজন টি-২০ ক্রিকেটে একজন ব্যাটসম্যান আউট হবার ১২০ সেকেন্ডের মধ্যে পরের ব্যাটসম্যান মাঠে প্রবেশ করতে হয়, না হয় তাকেও আউট ঘোষনা করার নিয়ম রয়েছে। এখন লর্ডসের মত বিশাল স্টেডিয়ামে যদি টি-২০ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে এই অল্প সময়ে খেলোয়াড়ের ড্রেসিংরুম থেকে নেমে আসা সত্যি অনেক কঠিন হয়ে যায় ! একারণে ক্রিকেট মাঠের বাউন্ডারি লাইনের বাইরে ছাউনি দিয়ে খেলোয়াড়দের পাশাপাশি কোচিং স্টাফদের বসার জায়গা করে দেয়া হয়েছে, যাতে করে সময় নিয়ন্ত্রন সহজ হয়। ক্রিকেটীয় পরিভাষায় এই ছাউনি দেয়া জায়গাটি “ডাগআউট” নামে পরিচিত।

একদিনের খেলায় ১১ জন খেলোয়াড়ের বাইরে যে অতিরিক্ত ৩-৪জন প্লেয়ারকে দলে রাখা হয়, তাদেরও স্থান হয় ডাগআউটে।

এতো গেলো ক্রিকেটের কথা।

ফুটবল মাঠের অনেক কিছুই তো আমরা চিনি বা জানি। ডি-বক্স, সেন্টার সবই তো চিনি আমরা। কিন্তু “টেকনিক্যাল এরিয়া” আমরা কয়জনই বা জানি ?

ফুটবল মাঠের পাশে যেখানে দুই দলের কোচ, ট্রেনিং ও মেডিক্যাল স্টাফ এবং অতিরিক্ত খেলোয়াড়েরা বসে থাকে, সেই এরিয়াটিকে টেকনিক্যাল এরিয়া বলা হয়। এই টেকনিক্যাল এরিয়ার অন্য নামই ডাগআউট।  খেলা চলাকালীন সময়ে এই টেকনিক্যাল এরিয়ার বাইরে বের হওয়া নিষেধ।

বিশেষ করে দুই দলের কোচের জন্যে নির্দিষ্ট করে দেয়া হয় একটি সীমানা। এই সীমানার বাইরে তারা বেরোতে পারেন না। ফুটবল মাঠে কোচদের এই সীমানার নাম টাচ লাইন। ফুটবল খেলার সময় চতুর্থ রেফারী লক্ষ্য রাখেন কোচরা যাতে টাচ লাইনের বাইরে না যেতে পারে। ম্যাচে লাল কার্ড পাওয়া কোনো প্লেয়ার ডাগআউটে বসতে পারেন না। এছাড়া, কোন ম্যাচে যদি কোন ফুটবলার বা কোচ নিষিদ্ধ থাকেন, তারাও ডাগআউটে বসতে পারেন না। ফুটবল খেলায় ডাগআউটের আবির্ভাব ১৯২০ সালের দিকে স্কটিশ ক্লাব অ্যাবারডেন ফুটবল ক্লাবের হোম গ্রাউন্ড Pittodrie স্টেডিয়ামে।   

ফুটবল, ক্রিকেটের পাশাপাশি বেসবল খেলাতেও রয়েছে এই ডাগআউট।  মূলত বেসবল খেলা থেকেই ডাগআউটের প্রচলনের শুরু।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন