প্রায় ৩ হাজার ৩০০ বছর আগের একটি ম্যামথকে পুনরুজ্জীবিত করতে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক অনেকদিন ধরেই কাজ করে যাচ্ছেন। আর এ কাজে আরও একধাপ এগিয়েছেন তারা। হাতির মত আকৃতির বিশাল এই লোমশ প্রাণীটিকে হয়তো পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তবে এ ব্যাপারে এখনই কিছু বলতে চাননি গবেষক দলটির প্রধান জর্জ চার্চ। তিনি বলেন এর ফলাফলের জন্য এখনও আমাদের অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হবে।
চার্চ জানান তার দল ম্যামথটির ক্লোন করার কোন চেষ্টা করছে না। বরং তারা এই প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীটির জিনোম পুনরুস্থাপন করার চেষ্টা করছে। তারা এর ডিএনএ নিয়ে গবেষণা করছেন, সেটার প্রতিরূপ তৈরি করা হয়েছে এবং সেটা একটি এশিয়ান হাতির জিনোমের ভিতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে।
এই প্রক্রিয়ায় ম্যামথটিকে হয়তো ফিরিয়ে আনা সম্ভব না। কিন্তু হাতিটির মধ্যে ম্যামথের ডিএনএ’র কারণে তার মাঝে ম্যামথের বৈশিষ্ট্য আসতে পারে। হয়তোবা এই হাতি একটি পশমি ম্যামথেরও জন্ম দিতে পারে।
ম্যামথের এই মৃতদেহটি খুব ঠাণ্ডা একটি স্থানে সংরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিলো। এর ডিএনএও অক্ষত অবস্থায় ছিল। অনেকেই তখন এই ম্যামথের ক্লোন করার কথা চিন্তা শুরু করা শুরু করে। কিন্তু অনেকে এই ব্যাপারে একমত ছিল না। অনেকের মতে এটা সৃষ্টিকর্তার কাজে হস্তক্ষেপ করার মতই। কিন্তু সবাই বলছে, বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এসব প্রাণীকে ক্লোনিং করার বদলে আমাদের উচিত যেসব প্রাণী এখনও টিকে আছে তাদের সংরক্ষণের ব্যাপারে নজর দেয়া।
গবেষক দল যেই পদ্ধতিটি ব্যবহার করছে তার নাম ‘ক্রিস্পর’। এই পদ্ধতিতে একটি জিনের হুবহু আরেকটি কপি পুনরুৎপাদন করা হয়। এক্ষেত্রে ম্যামথের ১৪টি জিন ব্যবহার করা হয়েছে এবং সেই জিনগুলো হাতির দেহে প্রবেশ করানো হয়েছে। চার্চ ব্যাখ্যা করেন, ঠাণ্ডা পরিবেশে বাঁচার জন্য কাজে লাগতো এমন চর্বির জিন, পশমি আর বড় আকারের কানের জন্য দায়ী এই জিন। এসব জিনের অনুরূপ তৈরি ও প্রতিস্থাপনের ব্যাপারে তারা বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।
তবে ঠিক কবে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির এই প্রকল্প সফল হবে বা আদৌ সফল হবে কি না সে ব্যাপারে এখনই কিছু বলা যায় না।