বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমাকে অনেক উদ্বিগ্ন করে তুলছে। আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটা রাজনীতিবিদের বাংলাদেশ ছাড়াও অন্য কোন না কোন দেশের দ্বিতীয় নাগরিকত্ব আছে এবং তাদের প্রায় সকলের সন্তান বিদেশে পড়াশুনা করছে।
আজকে প্রায় তৃতীয় সপ্তাহের ওপর স্কুলগুলোর ক্লাস হচ্ছে না, বাচ্চারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। শিক্ষার যে হারে ক্ষতি হচ্ছে তা নিয়ে আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের মাথা ব্যাথা খুবই কম, কেননা তারা ক্ষতির পরিমান বুঝতে পারছেন না।
আমি যদি ১০০ জন মানুষ মেরে ফেলি, কিন্তু আমার যদি ক্ষতি না হয়, তবে মানুষগুলোকে মারার ফলে তার পরিবারের ক্ষতি আমি কখনই অনুভব করব না। আমি ততক্ষন তাদের ক্ষতি উপলব্ধি করতে পারব না যতক্ষন আমি নিজে সেই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাব। শিক্ষার ব্যাপারটিও এখন তাই হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আমাদের দেশের সিদ্ধান্ত গ্রহনকারীদের যদি অন্য দেশের দ্বিতীয় নাগরিকত্ব না থাকতো, তাদের সকলের সন্তান যদি এই দেশেই পড়াশুনা করতো তবে এই রাজনীতিবিদরা কখনই শিক্ষার এত বড় ক্ষতি সাধন হতে দিতেন না !
হরতাল- অবরোধ যাই হোক না কেন আমি প্রতিদিন অফিসে আসি, শুটিঙের সময় শুটিং করি। আমাদের ব্যবসা আমরা যুদ্ধ করে টিকিয়ে রাখলেও শিক্ষার কী হবে? ছোট ছোট বাচ্চাদের লেখাপড়ার কী হবে?
আমি নিজেই খুব কষ্ট পাচ্ছি যে আমি এখনও এর বিপক্ষে কোন পদক্ষেপ নেই নি। আমি মন থেকে চাই এই পরিস্থিতি যেন খুব শীঘ্রই শিথিল হয় এবং আমি নিজেও খুব শীঘ্রই এই বাজে পরিস্থিতির বিপক্ষে পদক্ষেপ নিব।
আমি বিশ্বাস করি, দেশবাসী আমাকে ভালোবেসে এখন সেই জায়গায় এনেছেন যেখানে আমি কিছু বললে তারা সেই কথাটি শুনবেন এবং হৃদয় থেকে বুঝবেন। আমার ইচ্ছা আছে টেলিভিশন টকশোয়ের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জাগিয়ে তুলবো।
শিক্ষার্থীদের বলবো তোমরা আসো, বল যে আমরা এই হরতাল অবরোধ মানি না। আমরা আমাদের পরিস্থিতি আবার আগের মত স্বাভাবিক চাই!
আল্লাহ আমাকে এখন সেই অবস্থা দিয়েছেন যে আমি এখন কিছু বললে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা তা বুঝবে, কথা শুনবে এবং তারা মাঠেও নামবে। এর কারনে হয়ত আমি রাজনীতিবিদদের কু-নজরেও আসতে পারি, কিন্তু এভাবে আর কয়দিন? শিক্ষার আর কত ক্ষতি আমরা হতে দিব?
আমার মনে একটাই দুঃখ যদি আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের সন্তানরা এদেশে পড়াশুনা করতো, তবে হয়ত শিক্ষাক্ষেত্রের এই ধরনের ক্ষতি আমাদের দেশে হত না।
এম.এ জলিল অনন্ত
অভিনয় শিল্পী