বিজ্ঞান নিয়ে অনেকের মনেই ভয়ভীতি থাকে। জটিল সব সূত্র, গাণিতিক ব্যাখ্যা আর কাঠখোট্টা সব শব্দ শুনলেই কেমন যেন ভয় ভয় লাগা শুরু করে। জটিল এসব ঘটনাকে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়ে সহজভাবে তুলে ধরার কাজটিই করছে ‘সায়েন্স রকস’ টিভি অনুষ্ঠানটি। প্রতি সপ্তাহে ২টি করে ৫২ সপ্তাহে মোট ১০৪টি মজার মজার সায়েন্স এক্সপেরিমেন্ট দেখানো হবে তোমাদের আর বলে দেয়া হবে সেটা কেন হলো, কিভাবে হলো। আজ এক ঝলক জেনে নেয়া যাক সায়েন্স রকস টিভি অনুষ্ঠানের ৬ষ্ঠ পর্বে দেখানো ‘Screaming Balloon’ বা ‘বেলুনের চিৎকার’ এক্সপেরিমেন্ট।
যেকোন পার্টি, বিশেষ করে বাচ্চাদের অনুষ্ঠানে আমরা বেলুন ব্যবহার করে থাকি। সৌন্দর্য বর্ধন করাই বেলুনের কাজ। আচ্ছা বেলুন যদি চিৎকার করে উঠে তখন ব্যপারটা আরো আনন্দদায়ক হবেনা? কিন্তু কিভাবে? এই এক্সপেরিমেন্টে আমরা দেখাবো বেলুন কিভাবে চিৎকার করে।
যা যা লাগবেঃ
এত সহজ সহজ এক্সপেরিমেন্ট আগে আমরা করিনি। মাত্র দুটো জিনিস আমাদের দরকার; একটা বেলুন আর একটা হেক্সা নাট।
কিভাবে করবোঃ
প্রথমে নাট টি বেলুনের মধ্যে ঢুকিয়ে নেই। লক্ষ্য রাখতে হবে নাটটি যাতে সম্পূর্ণ বেলুনের মধ্যে ঢুকে। তা না হলে ফুলানোর সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এরপর ফুলানো শুরু করি। এমনভাবে ফুলাই যাতে ফেটে না যায়। এবার বেলুনের মুখ গিট দিয়ে বন্ধ করে দেই যাতে বাতাস বেরিয়ে আসতে না পারে। বেলুনের মুখ হাতের তালুতে রেখে আঙ্গুল দিয়ে বেলুনটা ধরি। এবার বেলুনটা উপুর করে ধরে হাতের কব্জির উপরে যেকোন এক পাশে বৃত্তাকার পথে ঘুরাতে থাকি। প্রথমদিকে নাট বেলুনের ভেতর লাফাতে থাকবে। কিছুক্ষণ পর নাটটি বেলুনের ভেতর বেলুনের গা বেয়ে বৃত্তাকার পথেই ঘুরতে থাকবে। আর এরই সাথে শুরু হবে বেলুনের চিৎকার। একবার নাট ঘুরা শুরু হলে অন্য হাত দিয়ে বেলুনের ঘূর্ণন থামিয়ে দেই, তখনো কিন্তু নাট ঘুরতে থাকবে এবং আরও জোরে শব্দ উৎপন্ন করবে। মনে হবে আমরা যেন গ্রাম্য সার্কাসে চলে এসেছি আর নাগরদোলার ভোঁ ভোঁ শব্দ শোনা যাচ্ছে।
কেন হলঃ
এই এক্সপেরিমেন্ট থেকে আমরা দুটো বিষয়ের ধারনা পাই- গতি ও শব্দ। বেলুনের গোলাকার গঠনের কারনে নাটটি গোলাকার পথে বেলুনের ভিতরের পৃষ্টে লেগে ঘুরতে থাকে। আমরা যদি নাটটিকে খালি হাতে ঘুরিয়ে ছেড়ে দিতাম তাহলে তা সরল পথেই যেত। আর তাই বেলুনের ভেতরের পৃষ্ঠ আর নাটের মধ্যে ঘর্ষনের সৃষ্টি হয়। যখন বেলুনটির ঘূর্ণন থামিয়ে দেওয়া হয় গতি জড়তার কারনে নাটটি তখনো ঘুরতে থাকে এবং তখন ঘর্ষণ আরও বেশি হয়। হেক্সা নাটে থাকে ছয়টা তল আর ছয়টা কোণা। যখন নাটটি ঘুরে, বেলুনের তলের সাথে কোণা গুলোর ঘর্ষনের ফলে কম্পনের সৃষ্টি হয়। আর এই কম্পন থেকে সৃষ্টি হয় বেলুনের চিৎকার।
আমরা চাইলে নাটের আকার ও বেলুনের আকার পরিবর্তন করেও এক্সপেরিমেন্টটি করে দেখতে পারি। এক্ষেত্রে বিভিন্ন আকারের জন্য বিভিন্ন তীব্রতার শব্দ শোনা যাবে।