স্ত্রী মশারা বেঁচে থাকার জন্য মানুষের রক্ত পান করে থাকে। মশার এই কামড়ের জন্য মশাদের দোষ দেয়াটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু বিজ্ঞানীরা সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখেছেন, মানুষের জিন এবং রক্ত মশার কামড়ানোর জন্য দায়ী। অর্থাৎ মশা আপনাকে কী পরিমাণ কামড়াবে তা আপনার রক্ত ও জিনের ওপর নির্ভর করবে।
যাদের মশা বেশি কামড়ায় অনেকেই ঠাট্টা করে বলে তাদের রক্ত নাকি মিষ্টি। মশার কামড় খাওয়া ব্যক্তিও মশা তাড়াতে তাড়াতে তা মেনে নেন।
London School of Hygiene and Tropical Medicine-এর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মশার কামড় খাওয়ার পিছনে আমাদের জিনের একটা বিশাল প্রভাব রয়েছে।
আইডেন্টিকাল টুইন (যাদের জেনেটিক ডাটাসেট একই-হুবহু যমজ) আর নন-আইডেন্টিকাল টুইন (যাদের জেনেটিক ডাটাসেটের মধ্যে কিছুটা অমিল থাকে)- এদের মধ্যে পরীক্ষা চালিয়ে দেখা যায়, আইডেন্টিকাল টুইনরা প্রায় সমান সংখ্যক মশার কামড়ে আক্রান্ত হন, কিন্তু নন-আইডেন্টিকাল টুইনদের মধ্যে কামড় খাওয়ায় কমবেশি হয়।
‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া এই রিপোর্টটির ভিত্তি যথেষ্ট মজবুত। মশার কারণে রোগের সংক্রমণ সমগ্র বিশ্বে বেড়েই চলেছে। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, হলুদ জ্বরের মত অসুখগুলো মানুষের জীবন পর্যন্ত কেড়ে নিতে পারে। মশার এই সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্রিটেনের বিজ্ঞানীরা আরও উন্নত গবেষণা চালাচ্ছেন। যাদের গুরুতর অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তারাও এ থেকে উপকৃত হতে পারেন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মশারা তাদের শিকার নির্বাচন করে মানুষের গায়ের গন্ধ শুঁকে। গর্ভবতী নারী এবং যাদের দেহের তাপমাত্রা কিঞ্চিৎ বেশি থাকে তারা মশাসহ অন্যান্য কীটপতঙ্গের আক্রমণের শিকার বেশি হন।
আরও মজার বিষয় হচ্ছে মশার দ্বারা এই সংক্রমণ বংশের উপরও নির্ভর করে।
তবে বিজ্ঞানীরা এখনও বের করতে পারেননি যে ঠিক কোন ক্রোমোজোমের কারণে মশারা মানুষের দিকে বেশি আকৃষ্ট হয় বা আদৌ মানুষের রক্ত তাদের কাছে মিষ্টি লাগে কিনা।
তবে রসুনের গন্ধে মশা পালানোর ঘটনাটা নিতান্তই ভিত্তিহীন।