বৃষ্টির পরে হঠাৎ রোদ উঠলে আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখেছো কখনো? সূর্যের বিপরীতে সাত রঙের বাহারি রংধনু দেখতে কার না ভালো লাগে! আর ছোটদের মাঝে এই রংধনু নিয়ে জল্পনা-কল্পনা আরও বেশী। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরতম প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলোর মধ্যে রংধনু অন্যতম। এক পশলা বৃষ্টির পর আকাশে অনেক সময় সাত রঙের যে মোহনীয় লীলা প্রদর্শিত হয় তাই মূলত রংধনু।
সাত রঙের রঙধনু কিংবা “বেনিআসহকলা” ছন্দ হয়তো এখন বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কারণ, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার র্যানডাল মনরো বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক রঙধনুর সাতটি রঙের সাথে আরেকটি অদৃশ্য রঙের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন।
রঙটি অস্পষ্ট বলে সাধারণভাবে এটি চোখে পড়ে না। তবে এই রঙটি মৌলিক রঙের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
সূর্যের আলো আপাত দৃষ্টিতে দেখতে সাদা হলেও তা মূলত সাতটি রঙের মিশ্রণ। বেগুনি, নীল, আসমানি (আকাশী), সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল। যা সংক্ষেপে বেনীআসহকলা নামে পরিচিত। প্রকৃতপক্ষে রংধনু সৃষ্টি হয় বাতাসে ভেসে থাকা পানির কণার মধ্য দিয়ে সূর্যের আলোর সাতটি মৌলিক রঙে বিভাজিত হওয়ার মাধ্যমে। বৃষ্টি শেষে বাতাসে যে পানির কণা ভাসমান থাকে তা অনেকটা প্রিজমের মতো কাজ করে সূর্যের আলোকে বিভাজিত করে। যখন প্রিজমের মতো আচরণ করে পানির কণাগুলো সূর্যের সাদা আলোকে সাতটি আলাদা আলোতে ভাগ করে তখন তা আমাদের চোখে রংধনু হিসেবে ধরা দেয়।
আমরা তো জানলাম যে কিভাবে রংধনু সৃষ্টি হয় বা তা কিভাবে আমাদের চোখে ধরা পড়ে। কিন্তু রংধনুর সাতটি রঙের সাথে অষ্টম রঙটি কিভাবে গবেষকরা আবিষ্কার করলেন ?
গবেষকরা জানিয়েছেন যে মানুষের চোখে এই অদৃশ্য রঙ ধরা পড়া অনেক কঠিন। এর জন্য তারা অতি শীতল সোডিয়াম বাষ্পের সঙ্গে আলোর কণার সংঘাত করেন। এর ফলে ফোটন কণার গতি কমে আসে। এই আলোক কণাগুলোকে কার্বন ন্যানো টিউবের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত করতেই নতুন ঐ অদৃশ্য আলোর অস্তিত্ব ধরা পড়ে বিজ্ঞানীদের কাছে। গবেষণাকর্মটির প্রধান অধ্যাপকের নাম হচ্ছে ড. ফ্লোরা প্যাডিওলিস।
সামরিক ক্ষেত্রে স্যাটেলাইট ভিত্তিক অনুসন্ধানে নতুন পাওয়া এই আলো কাজে লাগানো সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন বিজ্ঞানীরা।
নতুন রংটির এখনো কোনো নাম দেয়া হয়নি। নামকরনের পর স্বাভাবিক বর্ণচ্ছটার সঙ্গে যুক্ত করে দেয়া হবে রঙটি।