ধরো একদিন তোমার বন্ধু তোমাকে বললো ২০৮৭১১২ সংখ্যাটি ৩ দিয়ে বিভাজ্য কিনা তা কি তুমি বলতে পারবে ? তোমার বন্ধু আবার তোমাকে শর্ত দিলো ক্যালকুলেটর ছাড়া উত্তরটা বলতে হবে ? হয়তোবা তোমার মাথায় হাত প্রশ্নটা শুনে বা কিছুক্ষণ পরে তোমার বন্ধুকে জানিয়ে দিলে তুমি পারবে না ।
আজ তোমাদের বিভাজ্যতার কিছু শর্টকাট সূত্র বলবো যা তুমি সহজেই মনে রাখতে পারবে। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে এইসব সূত্রের সাহায্যে তুমি অনেক বড় বড় সংখ্যার বিভাজ্যতা নির্ণয় করতে পারবে খুব কম সময়ে।
বিভাজ্যতা বলতে বুঝায় একটি সংখ্যা অপর একটি সংখ্যা দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য কি না। একটু সহজভাবে বলা যায়, একটি সংখ্যাকে যদি অপর একটি সংখ্যা ভাগ করলে ভাগশেষ শূন্য হয়, তবে প্রথম সংখ্যাটি দ্বিতীয় সংখ্যা দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য।
১ এর বিভাজ্যতাঃ
যে কোন সংখ্যাই ১ দিয়ে বিভাজ্য।
২ এর বিভাজ্যতাঃ
যে সব সংখ্যা জোড়( ২, ৪, ৬, ৮, ১০, ১২, …… ) তারাই ২ দিয়ে বিভাজ্য। আরও সহজভাবে বলা যায়, যে সব সংখ্যার শেষ অংক( ২, ৪, ৬, ৮, ০ ) তারাই ২ দ্বারা বিভাজ্য।
যেমনঃ ৫৯৮, ৪৫৫৪, ৬৬২৩৫১০ ইত্যাদি।
৩ এর বিভাজ্যতাঃ
তিন(৩) দ্বারা বিভাজ্যতার ক্ষেত্রে সংখ্যাটির অঙ্কগুলোর সমষ্টি ৩ দ্বারা বিভাজ্য কি না।
২১৪৫ সংখ্যাটির অংক গুলোর যোগফল হচ্ছে ১২ যা ৩ দিয়ে বিভাজ্য। সুতরাং, ২১৪৫ সংখ্যাটি ৩ দ্বারা বিভাজ্য।
আরও কিছু উদাহারণ যা ৩ দিয়ে বিভাজ্য – ২০৮৭১১২, ৫৯২৩৮ ইত্যাদি।
৪ এর বিভাজ্যতাঃ
একটি সংখ্যা ৪ দিয়ে বিভাজ্য কি না তা দেখতে হলে সংখ্যাটির শেষ ২ টা অংক ৪ দিয়ে বিভাজ্য কি না তা দেখতে হবে।
আরও কিছু উদাহারণ যা ৪ দিয়ে বিভাজ্য – ১২৮, ১০৮, ১৭০২৪, ৪৪০, ৭৪৫২৮ ।
৫ এর বিভাজ্যতাঃ
কোন সংখ্যার শেষ অংক যদি ৫ বা ০ হয় তবেই সংখ্যাটি ৫ দ্বারা বিভাজ্য।
যেমনঃ ১২৩৫, ৫৪৮৬৫, ১১১৫ ইত্যাদি।
৬ এর বিভাজ্যতাঃ
সংখ্যাটি জোড় এবং অংকগুলোর যোগফল ৩ দ্বারা বিভাজ্য হলে উক্ত সংখ্যাটি ৬ দ্বারা বিভাজ্য হবে।
যেমনঃ ২১৯০, ২০৮৭১১২ ইত্যাদি।
৭ এর বিভাজ্যতাঃ
এককের অঙ্ককে বর্গ করে বাকি সংখ্যা থেকে বিয়োগ দিতে হবে। বিয়োগফলকে ৭ দ্বারা ভাগ করতে হবে। ভাগশেষ শূন্য হলে সংখ্যাটি ৭ দ্বারা বিভাজ্য আর না হলে ৭ দ্বারা বিভাজ্য না।
ধরি একটা সংখ্যা ৬৭২। এককের অঙ্ক ২ কে বর্গ করলে পাওয়া যায় ৪। বাকি সংখ্যা ৬৭ থেকে ৪ বিয়োগ করলে দাঁড়ায় ৬৩ যা ৭ দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য। সুতরাং, ৬৭২ ৭ দ্বারা বিভাজ্য।
৮ এর বিভাজ্যতাঃ
কোন সংখ্যা যদি ৩ বা তার চেয়ে বেশি অংক বিশিষ্ট হয় তবে ৮ দিয়ে বিভাজ্যতা দেখতে শুধুমাত্র শেষ ৩ অংক দেখতে হবে তা ৮ দিয়ে বিভাজ্য কি না। যদি শেষ ৩ অংক ৮ দিয়ে বিভাজ্য হয় তবেই সংখ্যাটি ৮ দিয়ে বিভাজ্য।
যেমনঃ ৫৪৮৬৬৪, ৪৪৮১৬, ৫৪৮৫৬১২ ইত্যাদি।
৯ এর বিভাজ্যতাঃ
সংখ্যাটির সবগুলো অংক যোগ করলে যোগফল যদি ৯ দিয়ে বিভাজ্য হয় তবেই সংখ্যাটি ৯ দিয়ে বিভাজ্য।
যেমনঃ ৫৮৫, ১২৩৩৯, ৬১৪২০৫ ইত্যাদি।
১০ এর বিভাজ্যতাঃ
কোন সংখ্যার শেষ অংক যদি ০ হয় তবেই সংখ্যাটি ১০ দিয়ে বিভাজ্য।
যেমনঃ ২০,৮০,৫৪০০,৫৫৮৭০ ইত্যাদি।
চলো এক নজরে আজকের বিষয়বস্তুর সারমর্ম দেখে নেই।
বিভাজ্যতা নির্ণয়:
► ২ দ্বারা বিভাজ্য: কোন সংখ্যার শেষ অংক বা এককের অংক যদি জোড়
সংখ্যা বা ০ হয়, তবে ঐ সংখ্যা ২ দ্বারা বিভাজ্য হবে
► ৩ দ্বারা বিভাজ্য: কোন সংখ্যার অঙ্কগুলোর সমষ্টি ৩ দ্বারা বিভাজ্য হলে সংখ্যাটি ৩ দ্বারা বিভাজ্য হবে
► ৪ দ্বারা বিভাজ্য: কোন সংখ্যার শেষ দুটি অংক দ্বারা গঠিত সংখ্যা ৪ দ্বারা বিভাজ্য হলে উক্ত সংখ্যাটি ৪ দ্বারা বিভাজ্য হবে
► ৫ দ্বারা বিভাজ্য: কোন সংখ্যার শেষে ০ বা ৫ থাকলে ঐ সংখ্যাটি ৫ দ্বারা বিভাজ্য হবে
► ৬ দ্বারা বিভাজ্য: সংখ্যাটি জোড় এবং অংকগুলোর যোগফল ৩ দ্বারা বিভাজ্য হলে উক্ত সংখ্যাটি ৬ দ্বারা বিভাজ্য হবে
► ৮ দ্বারা বিভাজ্য: কোন সংখ্যার শেষ ৩টি অংক দ্বারা গঠিত সংখ্যা ৮
দ্বারা বিভাজ্য হলে উক্ত সংখ্যা ৮ দ্বারা বিভাজ্য হবে
► ৯ দ্বারা বিভাজ্য: কোন সংখ্যার অংকগুলোর সমষ্টি ৯ দ্বারা বিভাজ্য হলে উক্ত সংখ্যাটি ৯ দ্বারা বিভাজ্য
► কোন সংখ্যার শেষ অংক যদি ০ হয় তবেই সংখ্যাটি ১০ দিয়ে বিভাজ্য