অচল তড়িৎ

বিজ্ঞান নিয়ে অনেকের মনেই ভয়ভীতি থাকে। জটিল সব সূত্র, গাণিতিক ব্যাখ্যা আর কাঠখোট্টা সব শব্দ শুনলেই কেমন যেন ভয় ভয় লাগে। জটিল সব ঘটনাকে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়ে সহজভাবে তুলে ধরার কাজটিই করছে সায়েন্স রকস টিভি অনুষ্ঠানটি। প্রতি সপ্তাহে ২টি করে ৫২ সপ্তাহে মোট ১০৪টি মজার মজার সায়েন্স এক্সপেরিমেন্ট দেখানো হবে তোমাদের আর বলে দেয়া হবে সেটা কেন হলো, কিভাবে হলো। আজ এক ঝলক জেনে নেয়া যাক সায়েন্স রকস টিভি অনুষ্ঠানের তৃতীয় পর্বে দেখানো অচল তড়িৎ পরীক্ষাটি।

বিদ্যুৎ ছাড়া বলা যায় আমাদের জীবন একরকম অচল। এখন তুমি যে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে এই লিখাটা পড়ছো বিদ্যুৎ না হলে তাও হয়তোবা অসম্ভব হতো ! আজকে আমরা বিদ্যুতের অন্য একটি রূপ সম্পর্কে জানবো যাকে বলা হয় অচল তড়িৎ বা Static Electricity। ঘর্ষনের ফলে যে তড়িৎ সৃষ্টি হয় তাকে অচল তড়িৎ বা স্থির তড়িৎ বলা হয়ে থাকে।  

কি কি লাগবেঃ
আমরা অধিকাংশ সময় সহজলভ্য উপাদান নিয়েই পরীক্ষা দেখিয়ে থাকি বা করে থাকি। এবারো তার ব্যতিক্রম নয়। আমাদের দরকার বেলুন, কোমল পানীয় (কোক বা স্প্রাইট) এর খালি ক্যান ও কাগজের ছোট ছোট টুকরো। পরীক্ষাটি আমরা বাসার খাবার টেবিলে বা পড়ার টেবিলে সম্পাদন করবো।

কিভাবে করবোঃ
প্রথমে আমরা বেলুনটিকে ফুলিয়ে নিবো। বাসায় বেলুন ফুলানোর পাম্পার থাকলে তা দিয়ে আমরা বেলুন ফুলিয়ে নিতে পারি। বেলুন ফুলানোর পরে গ্যাস যেন বেরিয়ে যেতে না পারে তাই বেলুনের মুখটাকে বেঁধে দিবো। এরপর, বেলুনটিকে কিছুক্ষণ ধরে মাথার চুলের সাথে ঘষবো। তারপর, টেবিলে রাখা ক্যানের কাছাকাছি আনতেই দেখা যাবে যে ক্যানটি একটু একটু নড়ছে এবং বেলুনটির কাছে আসার চেষ্টা করছে। কিছুক্ষণ পরে দেখা যাবে যে ক্যানটি আর নড়ছে না। তখন বেলুনটি আবার মাথার চুলের সাথে ঘষে ক্যানের কাছে ধরতেই আবার নড়ে উঠবে এবং ক্যানটি যেন নিজে নিজে বেলুনের পানে ছুটে চলেছে !

এই পরীক্ষাটি আমরা অন্য উপাদান দিয়েও করতে পারি। বেলুনটিকে মাথার চুলের সাথে ঘষার পরে কিছু ছোট ছোট করে ছেঁড়া কাগজের টুকরার কাছে আনলেই দেখা যাবে যে কাগজগুলো লাফ দিয়ে বেলুনের সাথে লেগে যাচ্ছে ও টুকরো কাগজগুলো বেলুনের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে বলে মনে হয় !

কেন হলোঃ
প্রত্যেক উপাদানের মধ্যে নিউক্লিয়াস থাকে ও তার চারপাশ দিয়ে ইলেকট্রন ঘোরে। এই ইলেকট্রন থেকেই Electricity বা বিদ্যুৎ নামটি এসেছে। যখন আমরা বেলুনটিকে মাথার চুলের সাথে ঘষি তখন কিছু ইলেকট্রন আমাদের মাথার চুল থেকে বেলুনে চলে যায়। এর ফলে বেলুনে একটি Negative চার্জ সৃষ্টি হয়, যা ক্যানের মধ্যে থাকা Positive চার্জকে আকর্ষণ করে। আমরা জানি, বিপরীতধর্মী চার্জ পরস্পরকে আকর্ষণ করে ও সমধর্মী চার্জ একে অপরকে বিকর্ষণ করে। তাই, ক্যানটি নিজে নিজে বেলুনের দিকে ধাবিত হয়। ঠিক একই ঘটনা ঘটছে ছোট ছোট কাগজের টুকরো ও বেলুনের মধ্যে।

বাসায় বা স্কুলে ভূতের ম্যাজিক দেখাতে চাইলে দেখাতে পারো এই পরীক্ষাটি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন