কেমন করে এলো ‘হাওয়াই মিঠাই’

হাওয়াই মিঠাই। খুব পরিচিত জনপ্রিয় একটি খাবার। আমাদের হাওয়াই মিঠাই বিলেতে ক্যান্ডিফ্লস নামে পরিচিত। গোলাপী রঙা পেঁজা তুলোর মতো দেখতে মিষ্টি হাওয়াই মিঠাই এমন একটি খাবার, যা ছাড়া মেলা বা গণউৎসব আয়ােজন পূর্ণ হয় না।

হাওয়াই মিঠাই নিয়ে রাস্তাঘাটে ফেরিওয়ালাদের ঘুরাঘুরির দৃশ্য দেখলে ছোটরাতো বটেই বড়দেরও জিভে জল আসে। মিষ্টি স্বাদের এই খাবারটির মাঝে কোথায় যেন এক ধরনের আনন্দ লুকিয়ে আছে।

এই হাওয়াই মিঠাইয়ের অদ্ভুত আকৃতির জন্য পৃথিবী জুড়ে এর অনেক নাম রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল কটন ক্যান্ডি, ক্যান্ডি ফ্লস, ফেইরি ফ্লস, পাপা’স বিয়ার্ড, ওল্ড ওমেন’স হেয়ার ইত্যাদি।

চিনি ও ফুড কালার দিয়ে তৈরি একাধিক রঙের এই খাবারটি সর্বপ্রথম ১৯ শতকে ইউরোপে চালু হয়। কিন্তু এর আগে হাওয়াই মিঠাই তৈরি খুব সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল ব্যাপার ছিল। তাই তখন খাবারটি অতোটা জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি।

১৮৯৭ সালে উইলিয়াম মরিসন (William Morrison) যিনি পেশায় একজন ডেন্টিস্ট ছিলেন ও জন ওয়ার্টন (John Warton) যিনি পেশায় একজন ময়রা ছিলেন তারা দুইজন মিলে হাওয়াই মিঠাই তৈরির হাতে চালানো যন্ত্র আবিষ্কার করেন।

যেই যন্ত্রটিতে চিনির সিরার মধ্যে কেন্দ্রমুখী বল প্রয়োগ করে সরু চিনির সুতা তৈরি করে এবং তা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সুতাগুলো একত্র করে হাওয়াই মিঠাই তৈরি করা হয়। খুব কম সময়ে তারা অনেকগুলো হাওয়াই মিঠাই তৈরি করে ফেলেন।

Eating cotton candy
ছবি : সংগৃহীত

কিন্তু ১৯০৪ সাল পর্যন্ত তাদের আবিষ্কার গোপন রাখেন। সেই বছর মিসৈরিতে হওয়া ওয়ার্ল্ড ফেয়ারে তারা তাদের আবিষ্কার সকলের সামনে প্রকাশ করেন। এই আবিষ্কারের সাহায্যে তারা মেলায় ৬৮ হাজার ৬৫৫ বক্স হাওয়াই মিঠাই ২৫ সেন্ট (যা এখনকার ৬ ডলার এর সমান) দামে বিক্রি করে।

সেই তখন থেকে এখন পর্যন্ত হাওয়াই মিঠাই তার নিজস্ব স্বাদ দিয়ে বিশ্বজুড়ে সবার মন জয় করে রেখেছে। আর তখন থেকে সেই ওয়ার্ল্ড ফেয়ার শুরুর প্রথম দিনটি অনুযায়ী অামেরিকায় প্রতি বছর ৭ ডিসেম্বর জাতীয় হাওয়াই মিঠাই দিবস বা national cotton candy day উদযাপিত হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন