গত ৩ বছর ধরে আমেরিকার অন্যতম সমৃদ্ধ প্রদেশ ক্যালফোর্নিয়া পানির অভাব দেখা দিয়েছে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটাই শেষ নয়, পরিণতি আরও ভয়াবহ হয়ে পারে। আর এই দুর্যোগের জন্য প্রধানভাবে দায়ী করা হয়েছে মানবসৃষ্ট কারণে জলবায়ুর পরিবর্তনকে।
গত এক শতকে ক্যালফোর্নিয়ায় এতো ভয়াবহ খরা দেখা যায়নি। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন তাদের কাছে প্রমাণ আছে, প্রকৃতির এই বিরূপ প্রভাবের জন্য মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনই দায়ী।
ক্যালফোর্নিয়া যেখানে প্রচুর পরিমাণে ফল এবং সবজি জন্মাত সেখানে ২০১২ সাল থেকে সৃষ্ট খরায় তা অনেকাংশেই কমে গিয়েছে। এই ৩ বছরে সেখানে শীতকালে তুষারপাতের পরিমাণও কমে গিয়েছে। গবেষকেরা বলছেন, এর ফলাফল মারাত্মক হতে পারে। ইতোমধ্যেই খরার কারণে পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে।
এই অবস্থার কারণে, ক্যালফোর্নিয়ার কেন্দ্রীয় উপত্যকার এক-চতুর্থাংশ আবাদি জমিতে কোন ফসল উৎপাদন হয়নি। ফলে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে ক্যালফোর্নিয়ার চাষিদের। শুধু তাই নয়, এ বছরের জানুয়ারি মাস ছিল ক্যালফোর্নিয়ার ইতিহাসে সবচাইতে শুষ্ক মাস। কোন কোন গবেষক আশঙ্কা করছেন যে পানিশূন্যতার এই অবস্থা আগামী ২০০ বছর ধরেও চলতে পারে।
স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক নোয়া ডিফেনবাগ বহু বছরের জলবায়ুর তথ্য-উপাত্ত গবেষণা করে বলেন, ‘জলবায়ুর ইতিহাস পর্যালোচনা করে আমরা দেখেছি কম তুষারপাত খরা সৃষ্টির অন্যতম প্রধান কারণ। তবে এই খরা দ্বিগুণ ভয়াবহ আকার ধারণ করে যখন কম তুষারপাতের সাথে উচ্চ তাপমাত্রাও দেখা যায়’।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই তাপমাত্রা এরকম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর প্রচুর পরিমাণে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের ফলেই জলবায়ুর এরকম পরিবর্তন ঘটছে বলে জানিয়েছেন ডিফেনবাগ।
ডিফেনবাগ এবং তার সহকর্মীরা যেরকম ধারণা করছেন তা সত্যি হলে ক্যালিফোর্নিয়ায় খরার তীব্রতা আরও বেড়ে যাবে। ক্যালিফোর্নিয়ার বসবাস করা ৪ কোটি মানুষের জন্য তা মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।