জার্মানির হেইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের দুইটি গবেষক দল পৃথক চেষ্টায় একটি দুর্লভ গ্রহ আবিষ্কার করেছেন।
গ্রহটির নাম তারা দিয়েছেন কেপলার-ফোর থ্রি টু বি। এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচাইতে ঘন এবং বেশি ভরবিশিষ্ট গ্রহগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।
দুটি গবেষক দলের একটির নেতৃত্বে আছেন Centre for Astronomy of Heidelberg University (ZAH)-এর 'মরিশিও অর্টিজ' এবং অন্যটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন হেইডেলবার্গের Max Planck Institute for Astronomy (MPIA)-এর 'সিমোনা সিসেরি'।
গবেষণা করার জন্য দুটি দলই স্পেনের আন্দালুসিয়াতে অবস্থিত সালার আলটো অবজারভেটরির ২.২ মিটার টেলিস্কোপটি ব্যবহার করেছেন। দুটি দলই বলেছে, গ্রহটি আয়তনে বৃহস্পতি গ্রহের সমান হলেও, ভরের দিক থেকে এটি বৃহস্পতির ৬ গুন। লাল রঙের একটি বিশাল নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে কেপলার-ফোরথ্রিটুবি।
নক্ষত্রটির রং লাল হওয়ায় মহাকাশবিদেরা এটাকে ‘লাল দানব’ বলে উল্লেখ করেছেন। নক্ষত্রটিকে ঘিরে ঘূর্ণায়মান কেপলার-ফোরথ্রিটুবি’র কক্ষপথের আকার এবং আয়তন খুবই অনিয়মিত। আগামী ২০০ মিলিয়ন বছরেরও কম সময়ের মধ্যে এই তারা তার সব গ্রহকে ধ্বংস করে ফেলবে।
জানা যায়, সাধারণত বেশিরভাগ গ্রহ যারা বড় কোন নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে তাদের কক্ষপথ সাধারণত বৃত্তাকার হয়। কিন্তু কেপলার-ফোরথ্রিটুবি’র ছোট এবং অতিরিক্ত সম্প্রসারিত কক্ষপথ এক্ষেত্রে অনেকটাই ব্যতিক্রম।
যে নক্ষত্রটিকে কেন্দ্র করে গ্রহটি ঘুরছে সেটি প্রতিনিয়ত সম্প্রসারিত হচ্ছে। এখনই এর ব্যাসার্ধ আমাদের সূর্যের চেয়ে ৪ গুন বড় এবং ক্রমাগত এটি বেড়েই চলেছে।
নক্ষত্রটির আকর্ষণের কারণে কেপলার-ফোরথ্রিটুবি মাঝে মাঝেই নক্ষত্রের খুব কাছে এবং অন্যান্য গ্রহগুলো থেকে দূরে সরে যায়। এর ফলে এই গ্রহের সারা বছরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক থাকে।
পৃথিবীর সময় অনুযায়ী, ৫২ দিন লাগে গ্রহটির পুরো কক্ষপথ একবার ঘুরে আসতে। এই গ্রহের শীতকালে তাপমাত্রা থাকে ৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর স্বল্পমেয়াদী গ্রীষ্মকালে এর তাপমাত্রা ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে।
মরিশিও অর্টিজ জানান, ‘কেপলার-ফোরথ্রিটুবি’র জীবনকাল নির্দিষ্ট এবং স্বল্প। ২০০ মিলিয়ন বছরের মধ্যে এর নক্ষত্র একে গিলে খাবে। একারণেই হয়তো কেপলার-ফোরথ্রিটুবি’র মত গ্রহগুলোকে আমরা খুব বেশি দেখতে পাই না’।