টেক দুনিয়ার ১০টি প্রচিলত ধারণা। যা আমরা হরহামেশাই শুনে থাকি। এই তথ্যগুলো কতোটা সঠিক চলুন তা জেনে নেই আজকে:
১. ম্যাক কম্পিউটার ভাইরাসে আক্রান্ত হয় না
অ্যাপল কম্পিউটার ম্যালওয়ার দ্বারা আক্রান্ত হয়। এতদিন অ্যাপল বলতো যে, তাদের কম্পিউটার উইন্ডোজ কম্পিউটারের মত এতোটা দুর্বল নয়, কিন্তু ২০১২ সালে অ্যাপলের হাজার হাজার কম্পিউটার ট্রোজান ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে অ্যাপল এ প্রচারনা থেকে সরে আসে।
২. অতিরিক্ত চার্জ ব্যাটারির ক্ষতি করে
অনেকে রাতে ফোন চার্জে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন যার ফলে ফোন পুরোপুরি চার্জ হওয়ার পরেও অতিরিক্ত চার্জ হয়। অনেকের মতে এতে ফোনের ব্যাটারি ক্ষতিগ্রস্ত হয় যদিও এর কোন ভিত্তি পাওয়া যায়নি। আজকালকার স্মার্টফোনে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। এসব ব্যাটারি পুরোপুরি চার্জ হওয়ার পর নিজ থেকেই চার্জ নেয়া বন্ধ করে দেয়।
৩. চার্জ পুরোপুরি শেষ না হলে চার্জ দেয়া যাবেনা
অনেকে মনে করেন ফোনের চার্জ একদম শেষ না হলে এটাকে চার্জ দেয়া উচিত কেননা সেটা আপনার ব্যাটারির জন্য ভালো। প্রকৃতপক্ষে একটি ব্যাটারির চার্জ সাইকেল থাকে যেগুলো পুরনো হলেই ব্যাটারির আয়ু কমে যায়। আপনার ব্যাটারির চার্জ যত বেশি কমবে আপনার চার্জ সাইকেলগুলো তত বেশি ব্যবহৃত হবে। সুতরাং আগে থাকতেই ফোন চার্জ দিন।
৪. ভাল মেগাপিক্সেলের ক্যামেরায় ভাল ছবি ওঠে
অনেকেরই ধারণা ক্যামেরার মেগাপিক্সেলের উপর নির্ভর করে ভাল ছবি ওঠে। তা মোটেও নয়। পিক্সেল হল এক ছবির কতগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশের বিভাজন, যা দ্বারা ছবিটিকে কতটা জুম করতে পারবেন তা নির্ভর করে। এর সঙ্গে ভাল ছবি ওঠা মোটেও নির্ভর করে না। ভাল ছবি ওঠে আপনার প্রাস্পেক্টিভের সঙ্গে সামঞ্জস্যপুর্ণ আলো এবং কম্পোজিশনের সমন্বয়ে। তাই ক্যামেরা অনেক বেশি মেগাপিক্সেলের না হলে ভাল ছবি উঠবে না এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসুন।
৫. পেনড্রাইভ সেভলি রিমোভ না করলে নষ্ট হয়ে যাবে
এটি আরেকটি ভুল তথ্য রয়েছে যা বেশির ভাগ মানুষই বিশ্বাস করে। পেনড্রাইভ কিংবা ইউএসবি কার্ড সেভলি রিমোভ না করলে দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। পেনড্রাইভ কিংবা ইউএসবি কার্ড ভাল থাকে ভাইরাস মুক্ত থাকলেই।
৬. চুম্বক কম্পিউটারের ডেটা নষ্ট করে
কম্পিউটারের ডেটাগুলো পুরোপুরি মুছে ফেলতে দরকার বেশি উন্নত মানের ম্যাগনেট বা চুম্বক। এমআরআই মেশিনে যে ধরনের ম্যাগনেট ব্যবহার করা হয় এমন ম্যাগনেটের আশপাশে আপনা পিসি থাকলে সামলে রাখুন। অন্যান্য ছোটখাটো চুম্বক আপনার পিসির ডেটা মোটেও মুছতে পারবে না।
৭. মোবাইল ফোন ব্রেইন ক্যান্সারের জন্য দায়ী
যদিও মোবাইল ফোন থেকে রশ্মি নির্গত হয় যা আমাদের দেহের টিস্যু শোষণ করে কিন্তু এরকম কোন প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি যে এর ফলে ব্রেইন ক্যান্সার হয়। মোবাইলে বেশি কথা বললে ব্রেইন এবং অন্যান্য টিস্যুর ক্ষতি হবে পারে তবে তা থেকে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
৮. নেটওয়ার্ক বেশি থাকলেই কথা বেশি শোনা যাবে
মোবাইলে কতটুকু নেটওয়ার্ক আছে তার ওপরে আপনার অপারেটরের সার্ভিস নির্ভর করবে না। এটার দ্বারা আসলে আপনি একটি নেটওয়ার্ক টাওয়ারের কতটা কাছে আছেন সেটাই বোঝা যায়। কিন্তু ইন্টারনেটের ভালো স্পিড পাওয়া বা স্পষ্ট কথা শুনতে পাওয়া অনেকগুলো ব্যাপারের উপর নির্ভর করে যেমন সে মুহূর্তে কতজন মানুষ সেই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে।
৯. কম্পিউটার প্রতিদিন বন্ধ করা ঠিক নয়
অনেকে মনে করেন কম্পিউটার বা ল্যাপটপ প্রতিদিন বন্ধ করে রাখলে তা ক্ষতিকর। তাই তারা ল্যাপটপ স্লিপ মুডে রাখেন আর কাজ করার সময়ে কাজ করেন। কিন্তু প্রতিদিন বন্ধ করলে কম্পিউটারের শক্তি সাশ্রয় হয় এবং এর উপর চাপ কম পড়ে। ফলে সেটি দীর্ঘদিন টিকে।
১০. স্মার্টফোনের ডিসপ্লে রেজ্যুলেশন সবসময় ভালো হয়
একটি ডিসপ্লে প্যাকে প্রতি ইঞ্চি ৩০০ পিক্সেলের বেশি হলে আমাদের চোখ তা ধরতে পারে না। ভালো ভালো স্মার্টফোনের ডিসপ্লে সাধারণত ১৯২০×১০৮০ হয় কিন্তু এবছর এলজি জি-৩ নামের একটি মোবাইল বাজারে আসে যেটার ডিসপ্লে ২৫৬০×১৪৪০। অথচ এই দুটোর মধ্যে কোন পার্থক্যই চোখে পড়ে না।